সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিজেপির শিক্ষানীতি : বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

বিজেপির শিক্ষা ও রাষ্ট্রনীতি এবং তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে, বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে।

সম্প্রতি শিবপুর আই আই ই এস টি-তে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে, তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে বলে অনেকের অভিমত

এক সময়ের আরবীয় (ইসলামিক) সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রভাবে উত্তর আফ্রিকা ও দক্ষিণ ইউরোপের বিস্তীর্ণ এলাকার (ভূমধযসাগরীয় এলাকা) মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞানের শিখর ছুঁয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে অর্থাৎ জনসমর্থনকে সহজে কব্জা করতে শাসক শ্রেণি রাজনীতির সঙ্গে ধর্মান্ধতাকে জুড়ে অন্ধ ভক্ত বানাতে শুরু করে। ফলে বিজ্ঞানচিন্তাকে পিছনে ফেলে ধর্মীয় অন্ধতা রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় প্রচন্ড গতিতে বাড়তে থাকে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তির চর্চা ও তার উন্নয়নের জন্য গবেষণা ছেড়ে জনগণকে বেশি বেশি করে আধ্যাত্মবাদী দর্শন চিন্তায় ঠেলে দেওয়া হয়। ফলে, সারাসেনীয় জাতি ( আরবভুমির মুসলমানরা) ক্রমশ অশিক্ষার অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকে। অথচ ইতিহাস বলছে, হজরত মহম্মদ-এর জীবৎকালেই আরব ভুমিতে আধুনিক শিক্ষার ভ্রূণ সৃষ্টি হয়েছিল, যার প্রভাবে পরবর্তীকালে বাগদাদ, সালার্নো, কায়রো ও কর্দোভার বিশ্ববিদ্যালয় রূপী মহীরুহের আবির্ভাব ঘটেছিল। আর এটা সম্ভব হয়েছিল নবিজির সেই উপদেশের সুত্র ধরে, যেখানে বলা হচ্ছে, "একাগ্রচিত্তে একঘণ্টা ধরে স্রষ্টার সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে চিন্তা সত্তর বছর ধরে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার চেয়ে অনেক ভালো।" যেদিন থেকে তাঁর এই বিজ্ঞান চিন্তার দর্শন ছেড়ে শুধুমাত্র আধ্যাত্ববাদী দর্শন চর্চায় ঢুকল, ঐক্যবদ্ধ আরবীয় সভ্যতা সেদিন থেকে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। 
বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যায় জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা ছেড়ে দিয়ে কীভাবে ইউরোপ ও আমেরিকার মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েছে তারা। বলা যায় আমেরিকার হাতের পুতুলের মতো নাচতে বাধ্য হচ্ছে।

আরবীয় সভ্যতার এই অধঃপতনের প্রেক্ষাপট সামনে রেখে আমাদের দেশের বর্তমান শাসক শ্রেণির শিক্ষা ও রাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষণ করলে প্রশ্ন ওঠে, ভারতীয় সভ্যতাও কি সেদিকেই যাচ্ছে?

অন্য দিকে পরাজিত ইউরোপ আরবীয় জ্ঞানবিজ্ঞানকে হাতিয়ার করে নিজেদের এগিয়ে নেওয়াকেই অগ্রাধীকার দেয়। ফলে পিছিয়ে পড়া জনজাতি জ্ঞানবিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে একসময় আরবীয় শাসকদের হারিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে নেয়। রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রদর্শনকে ত্যাগ করে জগতের চাহিদাকে মান্যতা দিয়ে তারা গনতান্ত্রিক ও ধর্মনরপেক্ষ ভাবধারাকে স্বাগত জানায়। এই পটপরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল তাদের যুক্তিবাদী চিন্তাধারা, বিজ্ঞানচেতনা বা বিজ্ঞানমনস্কতা ও ধর্মনরপেক্ষ রাষ্ট্র দর্শনকে মান্যতা দেওয়ার মত বিষয়।

অনেকেই ইরানকে সামনে আনছেন বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের নজির হিসেবে, যেখানে ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী দেশ শাসিত হয়। এ কথা ঠিক যে, শরীয়তি আওতায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবশ্যই এগিয়ে আছে ইরান। মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত উদ্যম নিয়ে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই উদ্যোগ ও উদ্যম উপযুক্ত ফলাফল আনতে পারছে না। পাচ্ছে না তার কারণ, এরা এখনো মৌলিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তারা যে ড্রোন ( 'শাহেদ ১৩৬' যা রাশিয়ায় 'কামেকাজি' নামে পরিচিত) উৎপাদন ও রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে বলে শোনা যাচ্ছে, তা মূলত মার্কিন মিডিয়ার প্রচার থেকে আমরা জানতে পারছি। মজার কথা হল, ইরান সরকারিভাবে এখনো তা স্বীকারও করেনি। হতে পারে, এটা তাদের রাজনৈতিক কৌশল। ভারত ও বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মের ধর্মপ্রাণ মানুষ উৎফুল্ল হচ্ছেন এই ভেবে যে ইসলামের রাজনৈতিক প্রয়োগের দৌলতেই বুঝি তাদের এই উত্থান ঘটেছে।

একথা অস্বীকার করা যায় না যে, ড্রোন প্রযুক্তি ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তির উদ্ভাবক আমেরিকা। আমেরিকার থেকে তা ক্রমশ পৃথিবীর কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ইরান যে ড্রোনের জন্য প্রচারে এসেছে তা তারা নিজেরা দেশীয় উপাদান দিয়ে অ্যাসেম্বেল করেছে মাত্র। এসেম্বল করা আর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা এক জিনিস নয়। এই অ্যাসেম্বেলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান মাইক্রোচিপস এবং জিপিএস মডিউল এর আবিষ্কারক আমেরিকা। আমেরিকান কোম্পানির কাছ থেকে এগুলো আমদানি করেই তারা নিজের মতো ডিজাইন করে এই ড্রোনগুলো তৈরি করেছে। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া তেলের টাকায় দুবাইতে পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিল্ডিং বানানো আর ওই বিল্ডিং বানানোর মৌলিক প্রযুক্তি আবিষ্কার করা এক জিনিস নয়। এটা আমরা অনেক ধর্মপ্রাণ বা বলা ভালো ধর্মান্ধ মানুষ বুঝতে ভুল করি।

মনে রাখতে হবে, কিছু প্রযুক্তি আমদানি এবং তাকে মোডিফাই করে কিছু ড্রোন ডেভেলপ করলেই সে দেশ উন্নত হয়ে যায় না। নতুন ও মৌলিক প্রযুক্তি যারা আবিষ্কার করতে পারে, তারাই প্রকৃত উন্নত দেশ। তা পারে পৃথিবীর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি দেশ যেমন, আমেরিকা, চিন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ইত্যাদি। অন্যসব দেশ এই দেশগুলোর সঙ্গে কোলাবারেশনে তারা তাদের সামরিক প্রযুক্তি ডেভেলপ করে মাত্র। খেয়াল করলে দেখা যায়, এই চারটি দেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর্শনের দিক থেকে ভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেও ধর্ম নিয়ে এরা বাড়াবাড়ি করে না, জনগণকে তা করতে দেয়ও না। ধর্মনিরেক্ষতা তাদের মূল হাতিয়ার। যেকোন মূল্যে তারা তাদের দেশের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হতে দেয় না। আর কে না জানে, যুগ যুগ ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অস্থিরতার জন্য একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা।

পাশাপাশি ছোট্ট রাষ্ট্র ইসরাইলের দিকে তাকান। যে দ্রুততার সঙ্গে একটা ছোট্ট রাষ্ট্র, যা ১৯৬৭ সালে আমেরিকা এবং ব্রিটেন পাশে না দাঁড়ালে পৃথিবীতে তার কোন অস্তিত্বই নেই, সে কীভাবে পৃথিবীর রাজনীতি ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্যিই নজরবিহীন। হিটলারের জার্মানিতে নজিরবিহীন গণহত্যার শিকার হয়েও তারা যে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে, তা তাদের আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষাকে হাতিয়ার করেই পেরেছে।

তবে এক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে। ওরা যা করতে পেরেছে তা আমেরিকার সহায়তা ছাড়া হত না। ওদের যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (আয়রন ডোম) যা পৃথিবী বিখ্যাত, এমন কি আমেরিকান সরকারও যা হাতে পেতে চায়, তা আমেরিকান কোম্পানির সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টারই ফল।

তবে দুটো ক্ষেত্রে ইসরাইল বিশিষ্টতা অর্জন করেছে। ১) সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট (উদ্ভাবন নয়) ২) গুপ্তচর সংস্থার অভাবনীয় এবং নজর কাড়া সাফল্য। ছোট্ট ভূখণ্ডের মালিক হয়েও (যদিও তার অধিকাংশই জবরদখল) যে দ্রুততার সঙ্গে শক্তি অর্জন এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদেরকে টিকিয়ে রেখেছে তা সম্ভব হয়েছে আধুনিক শিক্ষাকে হাতিয়ার করেই। আধুনিক শিক্ষাকে হাতিয়ার করেই তারা বিশ্ব রাজনীতির বড় বড় নীতি নির্ধারক দেশগুলির পার্লামেন্টে নিজেদের প্রভাব বিস্তারকারি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক বা লবি তৈরি করেছে। সেখানকার রাজনীতিতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষাকে হাতিয়ার করেই নিজেদের প্রতিনিধিত্ব বাড়িয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোন দেশ করতে পারিনি।

আমাদের দেশের বর্তমান সরকার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মতোই ধর্মদর্শন ভিত্তিক রাষ্ট্রদর্শন গড়ে তোলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এদিকে লক্ষ্য রেখেই বিজ্ঞান শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান বিরোধী মতাদর্শকে বিজ্ঞান বলে চালানোর চেষ্টা চলছে। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতাকে বজায় রেখে একটা জাতিকে বিভাজিত করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চলছে। এই কৌশল পিছিয়ে পড়া এবং মধ্যযুগীয়। মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণা নিয়ে আধুনিক যুগে নিজের সাফল্য নিশ্চিত করা যায় না। যুগের চাহিদাকে অস্বীকার করে পুরাতনপন্থাকে আশ্রয় করলে সাময়িকভাবে দলীয় স্বার্থে রাজনৈতিক জয় হলেও শেষ পর্যন্ত অস্ট্রিয়ার শাসক মেটারনিকের পরিণতিকেই বরণ করে নিতে হবে। আর ততদিনে দেশের অগ্রগতি বিশবাও দূরে চলে যাবে। স্বাধীনতা উত্তর ভারতীয় রাষ্ট্রের অগ্রগতির মডেলকে সামনে রাখলে যা মোটেই কাম্য বলে বিবেচিত হবে না।

------------XX------------

ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে

মন্তব্যসমূহ

📂 আলী হোসেনের জনপ্রিয় প্রবন্ধগুলি

হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল?

হিন্দু কারা? কীভাবে তারা হিন্দু হল? যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ হিন্দু হলেন কবে থেকে? অবাক হবেন তাই তো? কিন্তু আমি হবো না। কারণ, তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয়ই নন, ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং ‘শাহ’ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি। লালকৃষ্ণ আদবানির নামও শুনেছেন আপনি। মজার কথা হল আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ ‘আদবান’ থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর পদবীও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। ভাষাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের বিশ্লেষণ বলছে, উচ্চবর্ণের বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মানুষদের, উৎসভূমি হল পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল। তারও আগে ছিল ইউরোপের ককেশাস অঞ্চলে। আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। তারা নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন এবং এই পরিচয়ে তারা গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ ধরে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এসে এদেরই উত্তরসূরী ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) অর্থাৎ পারস্যের কিছু পর্যটক-ঐতিহাসিক, এদেশের আদিম অধিবাসীদের ’হিন্দু’ বলে অভিহিত করেছেন তাদের বিভিন্ন ভ্রমণ বৃত্তান্তে।

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন আলী হোসেন  যদি প্রশ্ন করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধর্ম কী? মনে হয় অনেকেই ঘাবড়ে যাবেন। কেউ বলবেন, তাঁর বাবা যখন ব্রাহ্ম ছিলেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই ব্রাহ্ম। যারা লেখাপড়া জানেন না, তারা বলবেন, কেন! উনি তো হিন্দু ছিলেন। আবার কেউ কেউ তথ্য সহযোগে এও বলার চেষ্টা করবেন যে, উনি নাস্তিক ছিলেন; না হলে কেউ বলতে পারেন, ধর্মমোহের চেয়ে নাস্তিকতা অনেক ভালো? ¹ রবীন্দ্রনাথের ধর্ম ভাবনার বিবর্তন  তাহলে সঠিক উত্তরটা কী? আসলে এর কোনোটাই সঠিক উত্তর নয়। চিন্তাশীল মানুষ-মাত্রই সারা জীবন ধরে ভাবেন, ভাবতে ভাবতে তাঁর উপলব্ধি বাড়তে থাকে ক্রমশঃ প্রগতির পথে। জগৎ ও জীবন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একে একে গড়ে তোলেন নিত্যনতুন জীবনদর্শন। তাই এ ধরনের মানুষ আজীবন এক এবং অখণ্ড জীবনদর্শনের বার্তা বহন করেন না। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাঁর পথচলার গতিমুখ। মানুষ রবীন্দ্রনাথও তাই পাল্টে ফেলেছেন তাঁর জীবন ও ধর্মদর্শন সময়ের বয়ে যাওয়াকে অনুসরণ করে। রবীন্দ্রনাথ ও  হিন্দু জাতীয়তাবাদ ১৮৬১ সালের ৭ই মে সোমবার রাত্রি ২টা ৩৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এর

সীমান্ত আখ্যান, বাঙালির আত্মানুসন্ধানের ডিজিটাল আখ্যান

সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ করছে (রাজনীতিকরা) আর কেউ কুফল (জনগন)। 'সীমান্ত আখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দে

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি - লিখছেন আলী হোসেন  কপালের লেখন খণ্ডায় কার সাধ্য? জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কিংবা লেখাপড়া জানা-নাজানা নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের সিংহভাগই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই কথাটা মেনে নেয়। জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে কপালের লেখনকে জায়গা করে দিতে তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। বরং বলা ভালো এব্যাপারে তারা অতিমাত্রায় উদার। মানুষের মনস্তত্বের এ-এক জটিল স্তর বিন্যাস। একই মানুষ বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণে ভিন্নভিন্ন দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে। এ রকমই একটি দৃষ্টিকোণ হলো কপাল বা ভাগ্যের ভূমিকাকে সাফল্যের চাবিকাঠি বলে ভাবা। কখনও সে ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, আবার কখনও নিজেই ভাগ্যের কাছে নির্দিধায় আত্ম সমর্পন করে। নিজের ব্যার্থতার পিছনে ভাগ্যের অদৃশ্য হাতের কারসাজির কল্পনা করে নিজের ব্যার্থতাকে ঢাকা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। মজার কথা, এক্ষেত্রে মুসলিম মানসের মনস্তত্ত্ব কখনও চেতনমনে আবার কখনও অবচেতন মনে উপরওয়ালাকে (আল্লাহকে) কাঠ গড়ায় তোলে বিনা দ্বিধায়। নির্দিধায় বলে দেয়, উপরওয়ালা রাজি না থাকলে কিছুই করার থাকেনা। সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা সবই তাঁর (আল্লার

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণের ভাগ্যলিপিতে লেখা হয়ে গেছে এই বিখ্যাত প্রবাদটির বিস্তারিত সারাৎসার। একদিকে পাকিস্তান আর অন্যদিকে ভারত – এই দুই প্রতিবেশি দেশের ভুরাজনৈতিক স্বার্থের যাঁতাকলে পড়ে তাদের এই হাল। কিন্তু কেন এমন হল? এই প্রশ্নের উত্তর জানে না এমন মানুষ ভুভারতে হয়তো বা নেই। কিন্তু সেই জানার মধ্যে রয়েছে বিরাট ধরণের ফাঁক। সেই ফাঁক গলেই ঢুকেছে কাশ্মির ফাইলসের মত বিজেপির রাজনৈতিক ন্যারেটিভ যা তারা বহুকাল ধরে করে চলেছে অন্য আঙ্গিকে। এবার নতুন মাধ্যমে এবং নবরূপে তার আগমন ঘটেছে, যায় নাম সিনেমা বা সেলুলয়েড প্রদর্শনী। যদিও ডিজিটাল মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সৌজন্যে অনেক আগেই সফলভাবে তারা এই ন্যারেটিভ দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। টেলিভিশন সম্প্রচারে কর্পোরেট পুজির অনুপ্রবেশের মাধ্যমে যার সূচনা হয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তিকে কুক্ষিগত করতে না পারলে দেশের সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব নয়, একথা সাধারণ নিরক্ষর নাগরিক এবং ত

শিক্ষা কী, কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে অর্জন করা যায়?

শিক্ষা কী, কেন এবং কীভাবে অর্জন করতে হয়? সূচিপত্র : What is education, why it is needed and how to achieve it শিক্ষা কী শিক্ষা হল এক ধরনের অর্জন, যা নিজের ইচ্ছা শক্তির সাহায্যে নিজে নিজেই নিজের মধ্যে জমা করতে হয়। প্রকৃতি থেকেই সেই অর্জন আমাদের চেতনায় আসে। সেই চেতনাই আমাদের জানিয়ে দেয়, জগৎ ও জীবন পরিচালিত হয় প্রকৃতির কিছু অলংঘনীয় নিয়ম-নীতির দ্বারা। গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ শক্তিকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কাজে লাগালেই এই নিয়মনীতিগুলো আমাদের আয়ত্বে আসে। এই নিয়ম-নীতিগুলো জানা এবং সেই জানার ওপর ভিত্তি করেই জগৎ ও জীবনকে সর্বোত্তম পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার পথ খুঁজে বের করার শক্তি অর্জনই শিক্ষা। মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষা কখনও কারও মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষা অর্জনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিটা আসলে কী। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে জানতে হবে, এই শিক্ষার সূচনা হয় কখন এবং কীভাবে? শিক্ষার সূচনা কখন হয় : এই অর্জনের সূচনা হয় মাতৃগর্ভে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবেই। প্রকৃতির দেওয়া কিছু সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই তার সূচনা। এই সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার পরবর্তী প

জল, না পানি : জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয়

জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয় আলী হোসেন  সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে চিত্র শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য পানি শব্দকে বাংলা নয় বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, "আমরা কোনোদিন কখনও বাংলা ভাষায় পানি (শব্দটা) ব্যবহার করি না"। শুধু তা-ই নয়, পানি শব্দের ব্যবহারের মধ্যে তিনি 'সাম্প্রদায়িকতার ছাপ'ও দেখতে পেয়েছেন। প্রশ্ন হল - এক, এই ভাবনা কতটা বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাস্থ্যকর এবং কতটা 'বাংলা ভাষার ইতিহাস' সম্মত? দুই, জল বা পানি নিয়ে যারা জলঘোলা করছেন তারা কি বাংলাকে ভালোবেসে করছেন? মনে হয় না। কারণ, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এরা কেউ নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াননি বা পড়ান না। ব্যবহারিক জীবনেও তারা বাংলার ভাষার চেয়ে ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে বা গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, বলা ভালো গর্ববোধ করেন। প্রসংগত মনে রাখা দরকার, বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোতে যারা ভর্তি হয়, তারা অধিকাংশই গরীব ঘরের সন্তান। বলা ভালো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারাই বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কারণ, সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়ানোর পাশাপাশি, বা

নিম্নবর্গের মানুষ মার খাচ্ছে কেন

নিম্নবর্গের মানুষ কীভাবে পিছিয়ে পড়েছেন? সমাধান কীভাবে? এদেশের নিম্নবর্গের মানুষ নিজেদের বাঁচাতে যুগ যুগ ধরে ধর্ম পরিবর্তন করেছে। কখনও বৌদ্ধ (প্রাচীন যুগ), কখনও মুসলমান (মধুযুগ), কিম্বা কখনো খ্রিস্টান (আধুনিক যুগ) হয়েছে। কিন্তু কখনই নিজেদের চিন্তা-চেতনাকে পাল্টানোর কথা ভাবেনি। পরিবর্তন হচ্ছে অলংঘনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম। যারা এই নিয়ম মেনে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে, তারাই লাভবান হয়, টিকে থাকে। “পাল্টে গেলেই জীবন বাড়ে না পাল্টালে নয়, জীবন মানেই এগিয়ে যাওয়া নইলে মৃত্যু হয়” জীবনের এই চরম সত্য তারা অধিকাংশই উপলব্ধি করতে পারেনি। পৃথিবীর যেকোন উন্নত জাতির দিকে তাকান, তারা দ্রুততার সঙ্গে এই পরিবর্তনকে মেনে নিজেদেরকে পুনর্গঠন করে নিয়েছে। যারা পারেনি বা নেয়নি তারাই মার খাচ্ছে, অতীতেও খেয়েছে। বুদ্ধিমান জাতি নিজের দুর্বলতাকে মেনে নেয় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সময়ের সঙ্গে তাল রেখে নিজেদের চিন্তা এবং চেতনায় পরিবর্তন আনে। খ্রিষ্টান, ইহুদি-সহ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন জাতি - যারাই এই পরিবর্তন মেনে নিয়েছে তারাই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মহানবীর (সঃ) গৌরবময় উত্থান (যা এক ধরণ

আধুনিক মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির (পুঁজিপতিদের) তোতাপাখি

গোদি মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির তোতাপাখি পশ্চিমী মিডিয়াকে 'ইসরাইল সরকারের তোতাপাখি' নামে পরিচয় দেওয়া হয় সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া হাউজের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি একইভাবে ভারতীয় কর্পোরেট মিডিয়া ভারত সরকার তথা 'কর্পোরেট পুঁজির  তোতাপাখি' হিসাবে পরিচয় পাচ্ছে, যাকে নিন্দুকেরা 'গোদী মিডিয়া' নামে অভিহিত করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইল যা বলে, ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া, তোতা পাখির মতো তা-ই প্রচার করে। সাংবাদিকতার প্রধান প্রধান শর্তগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরাইলের দেওয়া তথ্যই তারা প্রচার করে অন্ধ ও নির্লজ্জভাবে। ভারতের ক্ষেত্রেও করপোরেট মিডিয়া বর্তমানে সেটাই করছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, নত মস্তকে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য বিনা বিচারে প্রচার করে চলেছে অধিকাংশ মিডিয়া হাউজ।  অর্থাৎ তাদের সম্প্রচারিত খবরের বড় অংশই হয় নিয়ন্ত্রিত অথবা কখনও কখনও অসত্য - এমন দাবিও করা হয়।  আসলে সিংহভাগ মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন এক-একজন  করপোরেট পুঁজির মালিক বা পুঁজিপতি। এরা কি কখনও নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় - এমন খবর, তথ্য বা তত্ত্ব প্রচার করবে? করবে না, করেও না। আর এ

সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের আয়না

  সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। The face of the minority is the mirror of democracy কোন দেশ কতটা গণতান্ত্রিক, তা বোঝা যায় সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা কতটা মজবুত, তা থেকে। কারণ, সংখ্যালঘুর মুখই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। সংখ্যালঘুরা সঙ্গত কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চেয়ে বেশি বঞ্চনাজনিত মনস্তাত্ত্বিক চাপে থাকে। এই চাপ দু’ভাবে তৈরি হয়। ১) সংখ্যাগিষ্ঠতাজনিত সুবিধা যা সংখ্যাগুরুরা পায়, সংখ্যালঘুরা কখনই তা পায় না বা পাবে না - এই ধারণা, যার কিছুটা হলেও ভিত্তি রয়েছে ২) সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বৃহত্তম (?) জনগোষ্ঠীর অংশ হওয়ার সুবাদে যে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা তৈরি হয় এবং যা বহুজনের মধ্যে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তার ভয়ে। এই চাপ কতটা গভীর তা সংখ্যালঘু ছাড়া বোঝা খুব মুশকিল। তবে আলোকপ্রাপ্ত মানুষ মাত্রই যে তা উপলব্ধি করতে পারেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই ধরণের চাপ তৈরি করে কিছু অসাধু মানুষ যখন সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কমানোর ক্ষমতা একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির হাতেই থাকে