সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিম্নবর্গের মানুষ মার খাচ্ছে কেন

নিম্নবর্গের মানুষ কীভাবে পিছিয়ে পড়েছেন? সমাধান কীভাবে?

এদেশের নিম্নবর্গের মানুষ নিজেদের বাঁচাতে যুগ যুগ ধরে ধর্ম পরিবর্তন করেছে। কখনও বৌদ্ধ (প্রাচীন যুগ), কখনও মুসলমান (মধুযুগ), কিম্বা কখনো খ্রিস্টান (আধুনিক যুগ) হয়েছে। কিন্তু কখনই নিজেদের চিন্তা-চেতনাকে পাল্টানোর কথা ভাবেনি। পরিবর্তন হচ্ছে অলংঘনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম। যারা এই নিয়ম মেনে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে, তারাই লাভবান হয়, টিকে থাকে।

“পাল্টে গেলেই জীবন বাড়ে না পাল্টালে নয়,

জীবন মানেই এগিয়ে যাওয়া নইলে মৃত্যু হয়”

  • জীবনের এই চরম সত্য তারা অধিকাংশই উপলব্ধি করতে পারেনি।


পৃথিবীর যেকোন উন্নত জাতির দিকে তাকান, তারা দ্রুততার সঙ্গে এই পরিবর্তনকে মেনে নিজেদেরকে পুনর্গঠন করে নিয়েছে। যারা পারেনি বা নেয়নি তারাই মার খাচ্ছে, অতীতেও খেয়েছে। বুদ্ধিমান জাতি নিজের দুর্বলতাকে মেনে নেয় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সময়ের সঙ্গে তাল রেখে নিজেদের চিন্তা এবং চেতনায় পরিবর্তন আনে। খ্রিষ্টান, ইহুদি-সহ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন জাতি - যারাই এই পরিবর্তন মেনে নিয়েছে তারাই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মহানবীর (সঃ) গৌরবময় উত্থান (যা এক ধরণের সমাজ-বিপ্লব ) সেই পাল্টে যাওয়ার শক্তিকেই মান্যতা দেয়।


ভারতের উচ্চবর্গের মানুষদের দিকে তাকান, সেই একই চিত্র। পরিস্থিতি বিবেচনা করে একসময় তারা সুলতানি এবং মুঘল আমলে নিজেদেরকে পরিবর্তন করেছিল। তারা বুঝেছিল, যুগের তুলনায় তারা পিছিয়ে পড়েছে বলেই রাষ্ট্রক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে। সুতরাং নতুনকে তারা মেনে নিয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় রাজশক্তি হারালেও রাজনৈতিক ক্ষমতার অলিন্দগুলোতে এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিভূমিতে তাদের উপস্থিতি বজায় রাখতে পেরেছিল। এটা সম্ভব হয়েছিল, তার কারণ তারা দ্রুত নতুন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দর্শনকে আত্মস্থ করে নিজেদেরকে সময়ের উপযুক্ত করে নিয়েছিল।


ব্রিটিশ আমলে ঠিক একইভাবে তারা উপলব্ধি করেছিল ক্ষমতার এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিন্তা-চেতনা, ধর্ম-দর্শনে সংস্কার প্রয়োজন। বুঝেছিল ব্রিটিশরা মুঘলদের চেয়েও এগিয়ে। ফলে এবারও তারা সময়ের দাবি মেনেই ইংরেজি ভাষাশিক্ষাসহ আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চায় নিজেদের নিযুক্ত করেছে। প্রশাসনিক কার্যক্রমে নিজেদের উপযুক্ত করে তুলেছে।


অন্যদিকে নিম্নবর্গের মানুষ (আদিবাসী ও তাদের ধর্মান্তরিত মুসলিম) নিজেদের সমাজ, সংস্কৃতি ও ধর্ম রক্ষায় মরণপণ সংগ্রাম করেছে। নতুন আর্থ-সামাজিক ও রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং শিক্ষাকে বিদেশী বলে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিদেশীদের বিরুদ্ধে এই লড়াই নিজেদেরকে গৌরাবন্তিত করলেও বৈষয়িক হিসাবের দিক থেকে এটা (নতুন শিক্ষা,সংস্কৃতি ও সমাজ দর্শনকে অস্বীকার করা) ছিল মারাত্মক ভুল। এই ভুল উচ্চবর্গের মানুষ করেনি। তারা একটা সময় পর্যন্ত ব্রিটিশদের সঙ্গে সহযোগিতা করে সময় ও সুযোগ বুঝে স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল হালটি কব্জা করেছে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে।


অর্থাৎ সময়ের দাবীতেই তারা নিজেদের পাল্টে ফেলেছে। ফলে তারাই নেতৃত্বে থেকেছে। নিম্নবর্গের মানুষ, তারা যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই থেকে গেছে। সে হিন্দু হোক, কিম্বা মুসলিম। এরা মেয়েদের চাকরি করতে দিতে নারাজ থেকেছে। এখনও এরাই রেনু খাতুনের মত মেয়েরা চাকরি করতে চাইলে নির্দ্বিধায় হাতটা কেটে  দিতে পারে। অথবা নানা অজুহাতে মেয়েদের ঘরে অথবা একটা সীমাবদ্ধ গন্ডির মধ্যে আটকে থাকতে বাধ্য করে। এক্ষেত্রে তাদের প্রধান হাতিয়ার ধর্ম ও সংস্কৃতির অলঙ্ঘনীয় নীতি-নির্দেশিকা। লক্ষ্য করলে দেখবেন, এই নিয়মনীতি আকড়ে ধরে থাকার প্রেরণদাতা কিন্তু উচ্চবর্গের মানুষই। তারা ধর্মান্ধতার চাষ করে কিন্তু নিজেরা ব্যক্তিগত জীবনে তার নিবিড় চর্চা করে না। ঠিক যেমন আফিমসহ সমস্ত ড্রাগের চাষ যারা করায়, তাতে তারা নিজেরা কখনোই আসক্ত হয় না।


কিন্তু নিম্ন বর্গের মানুষরা একবারও ভাবে না, মানুষ যদি না বাঁচে তবে ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষা ও পালন করবে কে? ধর্ম বাঁচাতে গেলে তো আগে মানুষকে বাঁচতে হবে! সময় দাবী করছে নারীপুরুষ উভয়ের শিক্ষায় এবং উপার্জনে সমান অংশগ্রহন। আমরা হাঁটছি উল্টো পথে।


এই বৌদ্ধিক দুর্বলতার কারণেই উচ্চবর্গের মানুষেরা, তারা যেভাবে ভাবাচ্ছে, নিম্নবর্গের মানুষ সেটাই ভাবছে। তারা জেনে বুঝে হিসেব করে দেখেছে ভারতবর্ষের ক্ষমতা ও সম্পদকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণের রাখতে গেলে মানুষকে ধর্মান্ধ করে ফেলতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখে, বুদ্ধি খরচ করে, তারা সেটাই করছে। সিলেবাসে পরিবর্তনসহ, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়, শিল্প-সংস্কৃতির জগতে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পুঁজি বিনিয়োগ হচ্ছে নিম্নবর্গের মানুষকে প্রাচীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নাম করে ধর্মান্ধ করে তোলার উদ্দেশ্যে। নিম্নবর্গের মানুষ তাদের এই দুরভিসন্ধি ধরতেই পাচ্ছে না। 


পারবে কীভাবে? তারা তো তাদের চেতনাকে এখনো সেই পুরানো সংস্কার ও ঐতিহ্যের মোড়কে বন্দি করে রেখেছে। ফলে বুদ্ধির বিকাশ ঘটছে না। বিদ্যা আর বুদ্ধির সমন্বয়ে আসে সাফল্য। এক্ষেত্রে নিম্নবর্গের মানুষের (হিন্দু-মুসলিম-আদিবাসী) অর্জিত যোগফল তো প্রায় শূন্য।


আমরা ভুলে গেছি, আরবের মানুষ হযরত মুহাম্মদ-এর নেতৃত্বে পুরনোকে বাতিল করে নতুনকে গ্রহণ করেছিল বলেই সময়কে অনেকটাই অতিক্রম করতে পেরেছিল। দ্রুত ছুঁয়েছিলেন উন্নতির শিখর।


কিন্তু মুশকিল হচ্ছে তার উত্তরসূরিরা এই পরিবর্তনকেই সর্বশেষ পরিবর্তন বলে মেনে নিয়ে নিজেদের একটা গন্ডির মধ্যে বেঁধে ফেলেছেন। নবীজির জীবনযাপন প্রণালী ও বিভিন্ন পরামর্শ যা ‘হাদিস’ নামে পরিচিত, তা তিনি লিপিবদ্ধ করে রাখতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি নিজে বলেছেন, কোরআন ছাড়া আর কোন দলিল মানুষের জন্য প্রয়োজন নেই (বিদায় হজের ভাষণ)। কোরআনেও সে কথার উল্লেখ রয়েছে। সে কারণেই প্রথম চারজন খলিফা (খেলাফায়ে রাশেদীন) হাদিস সংকলন করার উদ্যোগ নেননি।


অথচ নবীজির মৃত্যুর ৩০০ বছর পর উজবেকিস্তানের ইমাম বুখারী শাসকের প্রয়োজন ও পরামর্শে  হাদিস সংকলন করলেন। আসলে পরিবর্তনকে আটকানোর জন্যই এটা করা হল। শুধু করা হলো তাই নয়, জাল হাদিসে ভরে গেল মুসলিম যুক্তিবুদ্ধির জগত। একটা নয়, ছয় ছয়টা হাদীসগ্রন্থ তৈরি হয়ে গেল। অসংখ্য ধারা-উপধারায় বিভক্ত হয়ে গেল ইসলাম। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে শত্রু এবং ইসলামবিরোধী বলে মারামারি খুনোখুনিতে নেমে গেল।


তাই আজ কোন পরিবর্তনকেই আমরা আর স্বীকার করতে পাচ্ছি না। ফলে পিছিয়ে যাচ্ছি। মার খাচ্ছি। ধর্মবিশ্বাসকে (যার একটা বড় অংশই অন্ধবিশ্বাস) বেঁচে থাকার এবং এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র হাতিয়ার ভাবছি। সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি। আমাদের নেতা কে হচ্ছেন এখন? শুধুমাত্র আরবি পড়তে জানা ধার্মিক মানুষ, যার সমগ্র শিক্ষাদীক্ষার ভরকেন্দ্র হচ্ছে কেবলমাত্র ধর্ম-দর্শন।


আজকে সারা বিশ্বের সবচেয়ে স্বীকৃত যে বিশ্বব্যবস্থা সেখানে ধর্ম দর্শনের ভূমিকা খুবই নগণ্য। আধুনিক রাষ্ট্রদর্শন অর্থনৈতিক বিধি-বিধান সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল সবই নতুন চেহারায় এসেছে এবং তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যার ভিত্তিভূমি হচ্ছে মুক্ত ও যুক্তিবাদী এবং বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা চেতনা। সেটাকে বোঝা এবং তার ওপর ভিত্তি করে সমাজ, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি প্রভৃতি বিষয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াটা জরুরী। আন্দোলন কতটা করব, কীভাবে করব, কখন করব, অথবা করবো না পরিস্থিতি বিবেচনায় - এ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাই সাফল্যের চাবিকাঠি।


কিন্তু চারিদিকে তাকিয়ে দেখুন, এ বিষয়ে যারা শিক্ষা অর্জন করেছেন, বৃহৎ জনগোষ্ঠী তাদেরকে নেতা বলে মানেন না। তাদের নেতৃত্বে বা পরামর্শে পথ চলেন না। কারণ, তারা তথাকথিত ধর্মদর্শন মেনে চলেন না, মাথায় টুপি বা মুখে দাড়ি রাখেন না। অথচ কোরান পড়ে দেখুন এগুলো ইসলামের অপরিহার্য অংশই নয়। কিন্তু অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ সহজ সরল জীবন যাপনের অধিকারী সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ এই মানুষদের মুসলমান বলে ভাবতে পারেন না। কেননা,  তাদের মনের কোণে সুকৌশলে গেঁথে দেওয়া হয়েছে যে, এক বিশেষ ধরণের পোশাক ও মুখে দাড়ি ও মাথায় টুপি না থাকলে পাঁচবার নামাজ না পড়লে কেউ সত্যিকারের মুসলমান হতে পারে না বা কেউ নেতাও হতে পারে না।


তাই নিম্নবর্গের মানুষ চলেন সেই সব তথাকথিত ধার্মিক মানুষদের পরামর্শে, যাদের বেশভূষায় তথাকথিত মুসলমানিত্বের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু তারা যে মত ও পথ অনুসরণ করে, তা তো আধুনিক আর্থ-সামাজিক ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় চলেনা।


এখানেও উচ্চবর্গের (হিন্দু-মুসলিম উভয়ের) মানুষদের দারুণ বোঝাপড়া রয়েছে। উচ্চবর্গের পুঁজির কারবারীরা তাদের প্রচার মাধ্যমে এই সমস্ত তথাকথিত পোশাকী ধর্মিকদেরকেই তাদের টেলিভিশন টকশোগুলোতে বসিয়ে দেন। অর্থাৎ পরোক্ষে এদেরকেই মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি বানিয়ে দেন। লক্ষ্য দুটো। এক, রাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ধর্মদর্শনের গুরুত্বকে সর্বোচ্চ আসনে বসিয়ে দেওয়া এবং দুই, আর্থ-সামাজিক ও রাষ্ট্র দর্শনের জটিল আবর্তে তাদের অসংগতিপূর্ণ বক্তব্যের অজুহাতে সমগ্র মুসলিম সমাজকে ধর্মান্ধ হিসাবে দাগিয়ে দিয়ে বিভাজনের রাজনীতিকে উস্কে দেওয়া।


অন্যদিকে দেখুন, যাদের কথা মানুষ মানেন, তারা আবার হাজার গ্রুপে বিভক্ত। তাই পদে পদে ভুল সিদ্ধান্ত। কেউ-না-কেউ সেই ভুল সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। ফলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। সেই ফাঁক দিয়ে গলে যাচ্ছে তারা, যারা আমাদেরকে ব্যবহার বা বিপদগামী  করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়, তাদের এজেন্ট। ফলে আপনার প্রচেষ্টা অবিবেচনার অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে এবং দোষীর ভাগি হচ্ছেন।


আমরা বুঝতেই পারছি না যে, পৃথিবীর কোন দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আলাদাভাবে তাদের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে আন্দোলন করলে তা কখনোই জয়লাভ করতে পারবে না।  (এক্ষেত্রে সংখ্যাগুরুর সাম্প্রদায়িক অংশ অক্সিজেন পায়)  পৃথিবীর কোনো দেশেই তারা পারেনি। মূলস্রোতে থেকেই শিক্ষা-দিক্ষায় চিন্তায়-চেতনায় পরিবর্তিত সময় ও পরিস্থিতির উপযুক্ত করে তুলে দেশের উন্নয়নে নিজেকে সামিল করতে হবে। তবেই আমার অধিকার সুনিশ্চিত হবে। ভুললে চলবে না একজন ধর্ম যাজক হয়েও ‘প্রজনন বিদ্যার জনক’ হতে গ্রেগর মেন্ডেলের কোন অসুবিধা হয়নি। অসংখ্য মুসলিম স্কলারও দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছেন।।

প্রথম প্রকাশিত ঃ
দিন দর্পন দৈনিক, এডিটোরিয়াল পেজ। ১৮/০৮/২০২২
দ্বিতিয় প্রকাশ ঃ
পেজফোর নিউজ-এ । ১৯/০৮/২০২২

পাঠকের মতামত দেখুন ফেসবুকে। এখানে ক্লিক করুন

মন্তব্যসমূহ

📂 আলী হোসেনের জনপ্রিয় প্রবন্ধগুলি

হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল?

হিন্দু কারা? কীভাবে তারা হিন্দু হল? যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ হিন্দু হলেন কবে থেকে? অবাক হবেন তাই তো? কিন্তু আমি হবো না। কারণ, তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয়ই নন, ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং ‘শাহ’ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি। লালকৃষ্ণ আদবানির নামও শুনেছেন আপনি। মজার কথা হল আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ ‘আদবান’ থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর পদবীও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। ভাষাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের বিশ্লেষণ বলছে, উচ্চবর্ণের বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মানুষদের, উৎসভূমি হল পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল। তারও আগে ছিল ইউরোপের ককেশাস অঞ্চলে। আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। তারা নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন এবং এই পরিচয়ে তারা গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ ধরে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এসে এদেরই উত্তরসূরী ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) অর্থাৎ পারস্যের কিছু পর্যটক-ঐতিহাসিক, এদেশের আদিম অধিবাসীদের ’হিন্দু’ বলে অভিহিত করেছেন তাদের বিভিন্ন ভ্রমণ বৃত্তান্তে।

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন আলী হোসেন  যদি প্রশ্ন করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধর্ম কী? মনে হয় অনেকেই ঘাবড়ে যাবেন। কেউ বলবেন, তাঁর বাবা যখন ব্রাহ্ম ছিলেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই ব্রাহ্ম। যারা লেখাপড়া জানেন না, তারা বলবেন, কেন! উনি তো হিন্দু ছিলেন। আবার কেউ কেউ তথ্য সহযোগে এও বলার চেষ্টা করবেন যে, উনি নাস্তিক ছিলেন; না হলে কেউ বলতে পারেন, ধর্মমোহের চেয়ে নাস্তিকতা অনেক ভালো? ¹ রবীন্দ্রনাথের ধর্ম ভাবনার বিবর্তন  তাহলে সঠিক উত্তরটা কী? আসলে এর কোনোটাই সঠিক উত্তর নয়। চিন্তাশীল মানুষ-মাত্রই সারা জীবন ধরে ভাবেন, ভাবতে ভাবতে তাঁর উপলব্ধি বাড়তে থাকে ক্রমশঃ প্রগতির পথে। জগৎ ও জীবন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একে একে গড়ে তোলেন নিত্যনতুন জীবনদর্শন। তাই এ ধরনের মানুষ আজীবন এক এবং অখণ্ড জীবনদর্শনের বার্তা বহন করেন না। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাঁর পথচলার গতিমুখ। মানুষ রবীন্দ্রনাথও তাই পাল্টে ফেলেছেন তাঁর জীবন ও ধর্মদর্শন সময়ের বয়ে যাওয়াকে অনুসরণ করে। রবীন্দ্রনাথ ও  হিন্দু জাতীয়তাবাদ ১৮৬১ সালের ৭ই মে সোমবার রাত্রি ২টা ৩৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এর

সীমান্ত আখ্যান, বাঙালির আত্মানুসন্ধানের ডিজিটাল আখ্যান

সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ করছে (রাজনীতিকরা) আর কেউ কুফল (জনগন)। 'সীমান্ত আখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দে

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি - লিখছেন আলী হোসেন  কপালের লেখন খণ্ডায় কার সাধ্য? জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কিংবা লেখাপড়া জানা-নাজানা নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের সিংহভাগই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই কথাটা মেনে নেয়। জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে কপালের লেখনকে জায়গা করে দিতে তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। বরং বলা ভালো এব্যাপারে তারা অতিমাত্রায় উদার। মানুষের মনস্তত্বের এ-এক জটিল স্তর বিন্যাস। একই মানুষ বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণে ভিন্নভিন্ন দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে। এ রকমই একটি দৃষ্টিকোণ হলো কপাল বা ভাগ্যের ভূমিকাকে সাফল্যের চাবিকাঠি বলে ভাবা। কখনও সে ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, আবার কখনও নিজেই ভাগ্যের কাছে নির্দিধায় আত্ম সমর্পন করে। নিজের ব্যার্থতার পিছনে ভাগ্যের অদৃশ্য হাতের কারসাজির কল্পনা করে নিজের ব্যার্থতাকে ঢাকা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। মজার কথা, এক্ষেত্রে মুসলিম মানসের মনস্তত্ত্ব কখনও চেতনমনে আবার কখনও অবচেতন মনে উপরওয়ালাকে (আল্লাহকে) কাঠ গড়ায় তোলে বিনা দ্বিধায়। নির্দিধায় বলে দেয়, উপরওয়ালা রাজি না থাকলে কিছুই করার থাকেনা। সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা সবই তাঁর (আল্লার

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণের ভাগ্যলিপিতে লেখা হয়ে গেছে এই বিখ্যাত প্রবাদটির বিস্তারিত সারাৎসার। একদিকে পাকিস্তান আর অন্যদিকে ভারত – এই দুই প্রতিবেশি দেশের ভুরাজনৈতিক স্বার্থের যাঁতাকলে পড়ে তাদের এই হাল। কিন্তু কেন এমন হল? এই প্রশ্নের উত্তর জানে না এমন মানুষ ভুভারতে হয়তো বা নেই। কিন্তু সেই জানার মধ্যে রয়েছে বিরাট ধরণের ফাঁক। সেই ফাঁক গলেই ঢুকেছে কাশ্মির ফাইলসের মত বিজেপির রাজনৈতিক ন্যারেটিভ যা তারা বহুকাল ধরে করে চলেছে অন্য আঙ্গিকে। এবার নতুন মাধ্যমে এবং নবরূপে তার আগমন ঘটেছে, যায় নাম সিনেমা বা সেলুলয়েড প্রদর্শনী। যদিও ডিজিটাল মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সৌজন্যে অনেক আগেই সফলভাবে তারা এই ন্যারেটিভ দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। টেলিভিশন সম্প্রচারে কর্পোরেট পুজির অনুপ্রবেশের মাধ্যমে যার সূচনা হয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তিকে কুক্ষিগত করতে না পারলে দেশের সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব নয়, একথা সাধারণ নিরক্ষর নাগরিক এবং ত

শিক্ষা কী, কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে অর্জন করা যায়?

শিক্ষা কী, কেন এবং কীভাবে অর্জন করতে হয়? সূচিপত্র : What is education, why it is needed and how to achieve it শিক্ষা কী শিক্ষা হল এক ধরনের অর্জন, যা নিজের ইচ্ছা শক্তির সাহায্যে নিজে নিজেই নিজের মধ্যে জমা করতে হয়। প্রকৃতি থেকেই সেই অর্জন আমাদের চেতনায় আসে। সেই চেতনাই আমাদের জানিয়ে দেয়, জগৎ ও জীবন পরিচালিত হয় প্রকৃতির কিছু অলংঘনীয় নিয়ম-নীতির দ্বারা। গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ শক্তিকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কাজে লাগালেই এই নিয়মনীতিগুলো আমাদের আয়ত্বে আসে। এই নিয়ম-নীতিগুলো জানা এবং সেই জানার ওপর ভিত্তি করেই জগৎ ও জীবনকে সর্বোত্তম পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার পথ খুঁজে বের করার শক্তি অর্জনই শিক্ষা। মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষা কখনও কারও মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষা অর্জনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিটা আসলে কী। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে জানতে হবে, এই শিক্ষার সূচনা হয় কখন এবং কীভাবে? শিক্ষার সূচনা কখন হয় : এই অর্জনের সূচনা হয় মাতৃগর্ভে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবেই। প্রকৃতির দেওয়া কিছু সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই তার সূচনা। এই সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার পরবর্তী প

জল, না পানি : জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয়

জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয় আলী হোসেন  সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে চিত্র শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য পানি শব্দকে বাংলা নয় বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, "আমরা কোনোদিন কখনও বাংলা ভাষায় পানি (শব্দটা) ব্যবহার করি না"। শুধু তা-ই নয়, পানি শব্দের ব্যবহারের মধ্যে তিনি 'সাম্প্রদায়িকতার ছাপ'ও দেখতে পেয়েছেন। প্রশ্ন হল - এক, এই ভাবনা কতটা বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাস্থ্যকর এবং কতটা 'বাংলা ভাষার ইতিহাস' সম্মত? দুই, জল বা পানি নিয়ে যারা জলঘোলা করছেন তারা কি বাংলাকে ভালোবেসে করছেন? মনে হয় না। কারণ, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এরা কেউ নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াননি বা পড়ান না। ব্যবহারিক জীবনেও তারা বাংলার ভাষার চেয়ে ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে বা গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, বলা ভালো গর্ববোধ করেন। প্রসংগত মনে রাখা দরকার, বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোতে যারা ভর্তি হয়, তারা অধিকাংশই গরীব ঘরের সন্তান। বলা ভালো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারাই বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কারণ, সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়ানোর পাশাপাশি, বা

আধুনিক মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির (পুঁজিপতিদের) তোতাপাখি

গোদি মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির তোতাপাখি পশ্চিমী মিডিয়াকে 'ইসরাইল সরকারের তোতাপাখি' নামে পরিচয় দেওয়া হয় সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া হাউজের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি একইভাবে ভারতীয় কর্পোরেট মিডিয়া ভারত সরকার তথা 'কর্পোরেট পুঁজির  তোতাপাখি' হিসাবে পরিচয় পাচ্ছে, যাকে নিন্দুকেরা 'গোদী মিডিয়া' নামে অভিহিত করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইল যা বলে, ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া, তোতা পাখির মতো তা-ই প্রচার করে। সাংবাদিকতার প্রধান প্রধান শর্তগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরাইলের দেওয়া তথ্যই তারা প্রচার করে অন্ধ ও নির্লজ্জভাবে। ভারতের ক্ষেত্রেও করপোরেট মিডিয়া বর্তমানে সেটাই করছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, নত মস্তকে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য বিনা বিচারে প্রচার করে চলেছে অধিকাংশ মিডিয়া হাউজ।  অর্থাৎ তাদের সম্প্রচারিত খবরের বড় অংশই হয় নিয়ন্ত্রিত অথবা কখনও কখনও অসত্য - এমন দাবিও করা হয়।  আসলে সিংহভাগ মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন এক-একজন  করপোরেট পুঁজির মালিক বা পুঁজিপতি। এরা কি কখনও নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় - এমন খবর, তথ্য বা তত্ত্ব প্রচার করবে? করবে না, করেও না। আর এ

সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের আয়না

  সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। The face of the minority is the mirror of democracy কোন দেশ কতটা গণতান্ত্রিক, তা বোঝা যায় সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা কতটা মজবুত, তা থেকে। কারণ, সংখ্যালঘুর মুখই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। সংখ্যালঘুরা সঙ্গত কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চেয়ে বেশি বঞ্চনাজনিত মনস্তাত্ত্বিক চাপে থাকে। এই চাপ দু’ভাবে তৈরি হয়। ১) সংখ্যাগিষ্ঠতাজনিত সুবিধা যা সংখ্যাগুরুরা পায়, সংখ্যালঘুরা কখনই তা পায় না বা পাবে না - এই ধারণা, যার কিছুটা হলেও ভিত্তি রয়েছে ২) সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বৃহত্তম (?) জনগোষ্ঠীর অংশ হওয়ার সুবাদে যে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা তৈরি হয় এবং যা বহুজনের মধ্যে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তার ভয়ে। এই চাপ কতটা গভীর তা সংখ্যালঘু ছাড়া বোঝা খুব মুশকিল। তবে আলোকপ্রাপ্ত মানুষ মাত্রই যে তা উপলব্ধি করতে পারেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই ধরণের চাপ তৈরি করে কিছু অসাধু মানুষ যখন সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কমানোর ক্ষমতা একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির হাতেই থাকে