সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল?

হিন্দু কারা? কীভাবে তারা হিন্দু হল?

অমিত শাহরা কি হিন্দু?

যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ হিন্দু হলেন কবে থেকে? অবাক হবেন তাই তো? কিন্তু আমি হবো না। কারণ, তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয়ই নন, ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং ‘শাহ’ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি।

লালকৃষ্ণ আদবানির নামও শুনেছেন আপনি। মজার কথা হল আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ ‘আদবান’ থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর পদবীও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। ভাষাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের বিশ্লেষণ বলছে, উচ্চবর্ণের বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মানুষদের, উৎসভূমি হল পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল। তারও আগে ছিল ইউরোপের ককেশাস অঞ্চলে।

আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। তারা নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন এবং এই পরিচয়ে তারা গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ ধরে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এসে এদেরই উত্তরসূরী ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) অর্থাৎ পারস্যের কিছু পর্যটক-ঐতিহাসিক, এদেশের আদিম অধিবাসীদের ’হিন্দু’ বলে অভিহিত করেছেন তাদের বিভিন্ন ভ্রমণ বৃত্তান্তে। পরবর্তী সময়ে ভারতে বসবাসকারী আর্য ভাষা গোষ্ঠীর উচ্চবর্ণের মানুষও এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন নিম্নবর্ণের মানুষদের (আদিম অধিবাসীদের) সম্পর্কে তাচ্ছিল্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে। অর্থাৎ হিন্দু শব্দটি তারা হীন অর্থে ব্যবহার করে এসেছেন দীর্ঘকাল ধরে। কারণ, অনার্য সভ্যতা (আদি ভারতীয় সভ্যতা) আর্যদের কাছে নিম্নস্তরের বলে বিবেচিত হতো সেই আদিকাল থেকেই। সুতরাং উচ্চবর্ণের মানুষরা যেমন ভারতীয় নয়, ‘হিন্দু’ শব্দটাও তেমনি ভারতীয় নয়। এটা একটা পার্শি শব্দ। এবং পার্শি পন্ডিতদের কল্যাণে আমাদের সংগে তার পরিচয়।

সুতরাং তাদেরই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হিন্দু হল তারা, যারা এদেশের আদিম অধিবাসী। মনে রাখা দরকার, এই আদিম অধিবাসীরা কিন্তু নিজেদের কোনদিন হিন্দু বলে ভাবতো না, বিশ্বাসও করত না। এখনও যারা মূল ধারায় রয়ে গেছেন, তারাও তা ভাবেন না। আসলে তাদের এই ‘হিন্দু পরিচয়’ বাইরের মানুষদের চাপিয়ে দেওয়া পরিচয়।

সুতরাং বর্তমানে যারা নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করছেন এবং হিন্দু ধর্মের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরছেন, তারা কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে এদেশীয়ও নয় এবং পারস্যের পর্যটকদের দ্বারা বর্ণিত হিন্দুও নয়।

হিন্দু শব্দটি যে তারা হীন অর্থে ব্যবহার করতেন, এবং তা যে মধ্যযুগে উৎপত্তি হওয়া একটি পার্শি শব্দ, তা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। তাই প্রাচীনকালে নিজেদের ধর্মের পরিচয় দিতে এই শব্দটি তারা তাদের ধর্মগ্রন্থে ব্যবহার করেননি। সে সময়ে তার প্রাসঙ্গিকতাও ছিল না। তাছাড়া, তারা যেমন নিজেদের হিন্দু বলে মনে করতেন না, তেমনি ভাবতেও পছন্দ করতেন না। মনে রাখুন, এ কারণেই তাদের কোনো ধর্মগ্রন্থেই ‘হিন্দু’ শব্দটা নেই।

সুলতানি ও মুঘল শাসকরা বিদেশ থেকে এসেছেন। ঠিক কথা। তাই তারা বিদেশি। তাও ঠিক কথা। অমিত শাহরাও তো বিদেশ থেকে এসেছেন। তাহলে তারা বিদেশি নয় কেন? সুলতানি ও মুঘল শাসকরা সংখ্যায় কতজন এসেছিলেন? পরিসংখ্যান বলছে বর্তমানে অমিত শাহরা (উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়, যারা নিজেদের আর্য বলে দাবি করে) সংখ্যায় মাত্র ৩ শতাংশ। আর একথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, সুলতানি ও মুঘল শাসকদের সংখ্যাও অমিত শাহদের চেয়ে কম বই বেশি হবে না। কারণ, অমিত শাহ’রা ভারতে এসেছেন প্রাচীনকালে, আর হাতে গোনা কিছু মানুষ মধ্যযুগীয় রীতিনীতি অনুযায়ী ভাগ্যান্বেষণে কিছু সৈন্য সামন্ত নিয়ে এদেশে এসেছেন মধ্যযুগে। এবং এদেশকে ভালোবেসে থেকেও গিয়েছেন। অমিত শাহের পূর্বপুরুষরাও তো সেভাবেই এসেছিলেন এবং এ দেশকে ভালোবেসে থেকে গিয়েছিলেন। পার্থক্য তো শুধু এখানেই যে, পাঠান-মুঘলদের আগে এসেছেন অমিত শাহের পূর্বপুরুষরা। সুতরাং বিদেশি যদি বলতেই হয়, তবে পাঠান মুঘলদের সাথে সাথে অমিত শাহ’দেরও তো বিদেশি বলতে হয়।

তাহলে কি দাঁড়ালো? পরিসংখ্যান বলছে শতকরা কম-বেশি ৮৫ শতাংশ মানুষ এদেশের আদিম অধিবাসীদের বংশোদ্ভুত। যাদের কেউ ধর্মান্তরিত হয়ে প্রথমে সনাতন (বৈদিক) এবং পরে বৌদ্ধ-জৈন সহ ৬৩টি ধর্মের অনুসারী হয়েছেন। আরও পরে কেউ মুসলিম, কেউ খ্রিস্টান ইত্যাদি হয়েছেন। সময়ের প্রয়োজনে অথবা কখনো পরিস্থিতির চাপে। বাকিরা আদিম অধিবাসীদের নিজস্ব ধর্ম সংস্কৃতিতে আস্থা রেখে, সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েও বেঁচে আছেন দলিত, নমঃশূদ্র, সাঁওতাল, কোল, ভীল, মুন্ডা, চুয়াড় ইত্যাদি নানা নামে।

সুতরাং হিন্দু যদি বলতেই হয়, পারস্যের ঐতিহাসিকদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তারা হল ভারতের নিম্নবর্ণের মানুষ যারা উচ্চবর্ণের সামাজিক ও আর্থিক বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ধর্মে কনভার্ট হয়েছেন, আর তারা, যারা ভারতের আদিমতম ধর্মবিশ্বাসগুলোকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন আজও। ধর্ম বিশ্বাস পরিবর্তন করলে জাতিসত্তা তো পাল্টায় না। তাহলে এদেশের মুসলিম জনসমাজ, যাদের ডিএনএ-তে ভারতীয় সত্ত্বার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে, তারা বিদেশি হয় কী করে?

এখন প্রশ্ন হল, বিদেশীদের দেওয়া তাচ্ছিল্যসূচক শব্দই বা আদি ভারতীয়দের ধর্ম হয় কী করে? মনে রাখুন, কোনো দিন তা হয়নি। অমিত শাহ’র পূর্বসূরীরা ১৮৫৭ পরবর্তী সময় থেকে চেষ্টা করছেন ‘হিন্দুধর্ম’ শব্দবন্ধকে ব্যবহার করতে এবং নিজেদের তার অনুসারী ও রক্ষক হিসেবে তুলে ধরতে। উদ্দেশ্য, নিম্ন বর্ণের মানুষদের (মুসলিম বাদে অন্য সকল আদিম অধিবাসীদের) একত্রিত করা। এবং বর্তমানে এই একত্রিত ভোট ব্যাঙ্ককে কাজে লাগিয়ে নিজেদের আর্থসামাজিক অবস্থানকে টিকিয়ে রাখা। কারণ, স্বামী বিবকানন্দ ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন যে, কালের নিয়মে ভারতে এবার শূদ্রদের শাসন কায়েম হবে। সত্যি কথা বলতে কি, এই ভয় অমিত শাহদের তাড়া করে ফিরছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অমিত শাহদের ধর্মও কিন্তু হিন্দু নয়। তারা বৈদিক ধর্মের অনুসারী। বেদ তাদের মূল ধর্মগ্রন্থ। আর্থিক শোষণ ও সামাজিক আধিপত্য ধরে রাখার তাগিদে তারা তাদের মূল গ্রন্থকে পাশ কাটিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মনুবাদ। মনু সংহিতা তার শাস্ত্রীয় রূপ। ভারতীয় সমাজে বিভাজনের সূত্রপাত এই মনুবাদী শাস্ত্র থেকেই। সেই তাগিতেই তারা পরবর্তীকালে নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করেছেন এবং হিন্দুদের রক্ষাকর্তা সাজার চেষ্টা করছেন।

ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখুন, মজাদার একটি তথ্য সামনে আসবে। দেখবেন, এরা ভারতীয় জনসমাজের একটি ক্ষুদ্র অংশ হওয়া সত্বেও যুগ যুগ ধরে নিজেদের আর্থসামাজিক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সব সময় রাজানুগত্য লাভের চেষ্টা করেছেন। হয় শাসক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, নয়তো বিজয়ী শাসকের প্রশাসনে উচ্চপদে আসীন থেকেছেন। সুলতানি ও মুঘল যুগ ধরে এরাই উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী হিসেবে কিম্বা সেনাপতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একই রকমভাবে ব্রিটিশ আমলেও ব্রিটিশদের আনুগত্য লাভের প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন তারা। নিম্নবর্ণের ও বর্গের মানুষরা তাদের অতীত ইতিহাস না জেনে এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর (উচ্চবর্ণের) শাসকের দ্বারা শাসিত ও শোষিত হয়ে চলেছেন।

ব্রিটিশ পরবর্তী স্বাধীন ভারতেও তারা সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। মজার কথা হলো, এখানেও তারা হিন্দুদের রক্ষাকর্তা সেজে নিম্নবর্ণের মানুষের উপর তাদের অর্থ-সামাজিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে চলেছেন।

পার্সিদের লেখা গ্রন্থে এদেশের আদিম অধিবাসীদের হিন্দু বলা হয়েছে। ইংরেজ শাসকরা পার্সীদের লেখা সেই ইতিহাস পড়ে এবং তাকে কিছুটা বিকৃত করে ভারতীয়দের ইতিহাস লিখতে বসেছেন। সেখানেই তারা মুসলিমকে বাদ দিয়ে অন্য সমস্ত জনগোষ্ঠীকে একত্রে হিন্দু বলে অভিহিত করেছেন। ১৮৫৭ সালের পর বিভাজনের রাজনীতি কায়েম করে দেশে ব্রিটিশ শাসনকে আরও দীর্ঘায়িত করার কৌশল হিসাবে এই বিকৃত ও অর্ধ-সত্য ইতিহাস পড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন; কলকাতা, মাদ্রাজ ও বোম্বাইতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। সেই ইতিহাসেই তুলে আনা হয়েছে ‘হিন্দু জাতিসত্তা’ নামক শব্দবন্ধকে। উদ্দেশ্য বহুত্ববাদী ভারতীয় জাতিসত্তাকে পরস্পর বিরোধী দু’ভাগে বিভক্ত করে দেওয়া এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে চালিত করা।

১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহের সময় সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের নেতৃত্বে ভারতের বহুত্ববাদী সমাজের সমন্বয়, যা পূর্ণতা পেয়েছিল সম্রাট আকবরের আমলে, কত শক্তিশালী ছিল তা ধরা পড়ে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং বিশ্বাসঘাতকতাকে আশ্রয় করে এবং নির্মম দমন-পীড়নের মাধ্যমে সে যাত্রায় ব্রিটিশরা রক্ষা পায়। সেই সঙ্গে তারা উপলব্ধি করে, এই সমন্বয়বাদী জাতিসত্তাকে ধ্বংস না করতে পারলে তাদের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ অচিরেই ধুলোয় মিশে যাবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে নতুন ধারার এই ইতিহাস পাঠের মধ্য দিয়ে বিভাজনের রাজনীতির সূচনা করে তারা। তথাকথিত হিন্দুধর্ম ও জাতিসত্তার উৎপত্তি এভাবেই। হিন্দু ও মুসলিম জাতিসত্তার পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাতও এখান থেকেই।

ইংরেজ নামে একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী তাদের তৈরি ঐতিহাসিকদের লেখা বিকৃত তথ্য ইতিহাস হিসেবে গিলিয়ে যেভাবে ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর সংখ্যালঘিষ্ঠের শাসন কায়েম রাখার চেষ্টা করেছিল, স্বাধীনতা উত্তরকালে ঠিক তেমনভাবেই ইংরেজদের তৈরি সেই বিকৃত ও বিভাজনের তত্ত্বে ভরা ইতিহাস ব্যবহার করে এবং ডিভাইট অ্যান্ড রুল পলিসির প্রয়োগ করে আজ আরএসএস বিজেপিও একই ধরণের শাসন প্রতিষ্ঠায় এবং তার সাহায্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। অর্থাৎ ইংরেজদের মতোই বিভাজনকে হাতিয়ার করে সমাজের একটি ক্ষুদ্র অংশের মানুষ রাজনৈতিক ক্ষমতা অধিকার এবং তাকে কাজে লাগিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী, যারা আদতে এদেশের আদিম অধিবাসী ( যারা শূদ্র, মুসলিম, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান ইত্যাদি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে আছে), তাদের ওপর অর্থনৈতিক আধিপত্য বজায় রাখতে চাইছে। সর্বোপরি মনুবাদী সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে নিম্নবর্ণের মানুষদের উপর তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে চাইছেন।

আরএসএস বিজেপি দাবি করছে ভারতের থাকতে গেলে ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতিকে মানতে হবে। খুবই ভালো কথা। এক্ষেত্রে দুটো প্রশ্ন খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠতে পারে -

১) ভারতের নিজস্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি আসলে কী? তারা বলতে চায় এই সংস্কৃতি হিন্দু সংস্কৃতি। হিন্দু শব্দের উৎপত্তি ও তার প্রাথমিক প্রয়োগকে সামনে রেখে যদি হিন্দু সংস্কৃতিকে নিজস্ব বলে ধরা হয় তাহলে তো ভারতের আদিম অধিবাসীদের যে ধর্ম সংস্কৃতি আছে, তাকেই মান্যতা দিতে হবে। কারণ, পার্শিয়ান ঐতিহাসিকদের তথ্য অনুযায়ী তারাই প্রকৃত হিন্দু। মানবেন? যদি না মানেন, তবে ভারতের বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিকেই স্বীকার করতে হবে, যার মর্ম কথা রবি ঠাকুরের ভাবনায় স্পষ্ট : 'নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান' , এবং তাকেই শক্তিশালী করার চেষ্টা করতে হবে।

২) ভারতীয় সংবিধান (যা যুক্তরাষ্ট্রীয় ধ্যান-ধারণায় জারিত) অনুযায়ী এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে মান্যতা দিলে প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে নিজস্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বেছে নেওয়ার এবং তা অনুসরণ করার।

তাহলে অমিত শাহ’রা কীভাবে দাবি করতে পারেন, তাদের অনুসৃত একটা নির্দিষ্ট ধর্ম ও সংস্কৃতি, যাকে পুরোদস্তুর 'সংকীর্ণ অর্থে রাজনীতিকরণ' করা হয়েছে, তা মেনে নিতে হবে? নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে গলা ফাটাবেন, অন্যদিকে অগণতান্ত্রিক দাবি করবেন, তা কী এক ধরণের রাজনৈতিক ভন্ডামি নয়?
--------xx-------

📰 লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে দিন দর্পণ দৈনিক সংবাদপত্রের উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধ বিভাগে।
✍️ প্রকাশের তারিখ : ২০/০৪/২০২৩

পাঠকের মতামত দেখুন ফেসবুকে

মন্তব্যসমূহ

  1. উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ সাথি। সময় করে এবং মনোযোগ দিয়ে লেখাটা পড়েছেন জেনে ভালো লাগছে। মতামত দেওয়াটা আমার কাছে বাড়তি পাওনা।

      মুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

📂 আলী হোসেনের জনপ্রিয় প্রবন্ধগুলি

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন আলী হোসেন  যদি প্রশ্ন করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধর্ম কী? মনে হয় অনেকেই ঘাবড়ে যাবেন। কেউ বলবেন, তাঁর বাবা যখন ব্রাহ্ম ছিলেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই ব্রাহ্ম। যারা লেখাপড়া জানেন না, তারা বলবেন, কেন! উনি তো হিন্দু ছিলেন। আবার কেউ কেউ তথ্য সহযোগে এও বলার চেষ্টা করবেন যে, উনি নাস্তিক ছিলেন; না হলে কেউ বলতে পারেন, ধর্মমোহের চেয়ে নাস্তিকতা অনেক ভালো? ¹ রবীন্দ্রনাথের ধর্ম ভাবনার বিবর্তন  তাহলে সঠিক উত্তরটা কী? আসলে এর কোনোটাই সঠিক উত্তর নয়। চিন্তাশীল মানুষ-মাত্রই সারা জীবন ধরে ভাবেন, ভাবতে ভাবতে তাঁর উপলব্ধি বাড়তে থাকে ক্রমশঃ প্রগতির পথে। জগৎ ও জীবন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একে একে গড়ে তোলেন নিত্যনতুন জীবনদর্শন। তাই এ ধরনের মানুষ আজীবন এক এবং অখণ্ড জীবনদর্শনের বার্তা বহন করেন না। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাঁর পথচলার গতিমুখ। মানুষ রবীন্দ্রনাথও তাই পাল্টে ফেলেছেন তাঁর জীবন ও ধর্মদর্শন সময়ের বয়ে যাওয়াকে অনুসরণ করে। রবীন্দ্রনাথ ও  হিন্দু জাতীয়তাবাদ ১৮৬১ সালের ৭ই মে সোমবার রাত্রি ২টা ৩৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এর

সীমান্ত আখ্যান, বাঙালির আত্মানুসন্ধানের ডিজিটাল আখ্যান

সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ করছে (রাজনীতিকরা) আর কেউ কুফল (জনগন)। 'সীমান্ত আখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দে

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি - লিখছেন আলী হোসেন  কপালের লেখন খণ্ডায় কার সাধ্য? জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কিংবা লেখাপড়া জানা-নাজানা নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের সিংহভাগই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই কথাটা মেনে নেয়। জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে কপালের লেখনকে জায়গা করে দিতে তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। বরং বলা ভালো এব্যাপারে তারা অতিমাত্রায় উদার। মানুষের মনস্তত্বের এ-এক জটিল স্তর বিন্যাস। একই মানুষ বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণে ভিন্নভিন্ন দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে। এ রকমই একটি দৃষ্টিকোণ হলো কপাল বা ভাগ্যের ভূমিকাকে সাফল্যের চাবিকাঠি বলে ভাবা। কখনও সে ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, আবার কখনও নিজেই ভাগ্যের কাছে নির্দিধায় আত্ম সমর্পন করে। নিজের ব্যার্থতার পিছনে ভাগ্যের অদৃশ্য হাতের কারসাজির কল্পনা করে নিজের ব্যার্থতাকে ঢাকা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। মজার কথা, এক্ষেত্রে মুসলিম মানসের মনস্তত্ত্ব কখনও চেতনমনে আবার কখনও অবচেতন মনে উপরওয়ালাকে (আল্লাহকে) কাঠ গড়ায় তোলে বিনা দ্বিধায়। নির্দিধায় বলে দেয়, উপরওয়ালা রাজি না থাকলে কিছুই করার থাকেনা। সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা সবই তাঁর (আল্লার

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণের ভাগ্যলিপিতে লেখা হয়ে গেছে এই বিখ্যাত প্রবাদটির বিস্তারিত সারাৎসার। একদিকে পাকিস্তান আর অন্যদিকে ভারত – এই দুই প্রতিবেশি দেশের ভুরাজনৈতিক স্বার্থের যাঁতাকলে পড়ে তাদের এই হাল। কিন্তু কেন এমন হল? এই প্রশ্নের উত্তর জানে না এমন মানুষ ভুভারতে হয়তো বা নেই। কিন্তু সেই জানার মধ্যে রয়েছে বিরাট ধরণের ফাঁক। সেই ফাঁক গলেই ঢুকেছে কাশ্মির ফাইলসের মত বিজেপির রাজনৈতিক ন্যারেটিভ যা তারা বহুকাল ধরে করে চলেছে অন্য আঙ্গিকে। এবার নতুন মাধ্যমে এবং নবরূপে তার আগমন ঘটেছে, যায় নাম সিনেমা বা সেলুলয়েড প্রদর্শনী। যদিও ডিজিটাল মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সৌজন্যে অনেক আগেই সফলভাবে তারা এই ন্যারেটিভ দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। টেলিভিশন সম্প্রচারে কর্পোরেট পুজির অনুপ্রবেশের মাধ্যমে যার সূচনা হয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তিকে কুক্ষিগত করতে না পারলে দেশের সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব নয়, একথা সাধারণ নিরক্ষর নাগরিক এবং ত

শিক্ষা কী, কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে অর্জন করা যায়?

শিক্ষা কী, কেন এবং কীভাবে অর্জন করতে হয়? সূচিপত্র : What is education, why it is needed and how to achieve it শিক্ষা কী শিক্ষা হল এক ধরনের অর্জন, যা নিজের ইচ্ছা শক্তির সাহায্যে নিজে নিজেই নিজের মধ্যে জমা করতে হয়। প্রকৃতি থেকেই সেই অর্জন আমাদের চেতনায় আসে। সেই চেতনাই আমাদের জানিয়ে দেয়, জগৎ ও জীবন পরিচালিত হয় প্রকৃতির কিছু অলংঘনীয় নিয়ম-নীতির দ্বারা। গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ শক্তিকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কাজে লাগালেই এই নিয়মনীতিগুলো আমাদের আয়ত্বে আসে। এই নিয়ম-নীতিগুলো জানা এবং সেই জানার ওপর ভিত্তি করেই জগৎ ও জীবনকে সর্বোত্তম পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার পথ খুঁজে বের করার শক্তি অর্জনই শিক্ষা। মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষা কখনও কারও মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষা অর্জনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিটা আসলে কী। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে জানতে হবে, এই শিক্ষার সূচনা হয় কখন এবং কীভাবে? শিক্ষার সূচনা কখন হয় : এই অর্জনের সূচনা হয় মাতৃগর্ভে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবেই। প্রকৃতির দেওয়া কিছু সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই তার সূচনা। এই সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার পরবর্তী প

জল, না পানি : জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয়

জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয় আলী হোসেন  সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে চিত্র শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য পানি শব্দকে বাংলা নয় বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, "আমরা কোনোদিন কখনও বাংলা ভাষায় পানি (শব্দটা) ব্যবহার করি না"। শুধু তা-ই নয়, পানি শব্দের ব্যবহারের মধ্যে তিনি 'সাম্প্রদায়িকতার ছাপ'ও দেখতে পেয়েছেন। প্রশ্ন হল - এক, এই ভাবনা কতটা বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাস্থ্যকর এবং কতটা 'বাংলা ভাষার ইতিহাস' সম্মত? দুই, জল বা পানি নিয়ে যারা জলঘোলা করছেন তারা কি বাংলাকে ভালোবেসে করছেন? মনে হয় না। কারণ, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এরা কেউ নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াননি বা পড়ান না। ব্যবহারিক জীবনেও তারা বাংলার ভাষার চেয়ে ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে বা গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, বলা ভালো গর্ববোধ করেন। প্রসংগত মনে রাখা দরকার, বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোতে যারা ভর্তি হয়, তারা অধিকাংশই গরীব ঘরের সন্তান। বলা ভালো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারাই বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কারণ, সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়ানোর পাশাপাশি, বা

নিম্নবর্গের মানুষ মার খাচ্ছে কেন

নিম্নবর্গের মানুষ কীভাবে পিছিয়ে পড়েছেন? সমাধান কীভাবে? এদেশের নিম্নবর্গের মানুষ নিজেদের বাঁচাতে যুগ যুগ ধরে ধর্ম পরিবর্তন করেছে। কখনও বৌদ্ধ (প্রাচীন যুগ), কখনও মুসলমান (মধুযুগ), কিম্বা কখনো খ্রিস্টান (আধুনিক যুগ) হয়েছে। কিন্তু কখনই নিজেদের চিন্তা-চেতনাকে পাল্টানোর কথা ভাবেনি। পরিবর্তন হচ্ছে অলংঘনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম। যারা এই নিয়ম মেনে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে, তারাই লাভবান হয়, টিকে থাকে। “পাল্টে গেলেই জীবন বাড়ে না পাল্টালে নয়, জীবন মানেই এগিয়ে যাওয়া নইলে মৃত্যু হয়” জীবনের এই চরম সত্য তারা অধিকাংশই উপলব্ধি করতে পারেনি। পৃথিবীর যেকোন উন্নত জাতির দিকে তাকান, তারা দ্রুততার সঙ্গে এই পরিবর্তনকে মেনে নিজেদেরকে পুনর্গঠন করে নিয়েছে। যারা পারেনি বা নেয়নি তারাই মার খাচ্ছে, অতীতেও খেয়েছে। বুদ্ধিমান জাতি নিজের দুর্বলতাকে মেনে নেয় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সময়ের সঙ্গে তাল রেখে নিজেদের চিন্তা এবং চেতনায় পরিবর্তন আনে। খ্রিষ্টান, ইহুদি-সহ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন জাতি - যারাই এই পরিবর্তন মেনে নিয়েছে তারাই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মহানবীর (সঃ) গৌরবময় উত্থান (যা এক ধরণ

আধুনিক মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির (পুঁজিপতিদের) তোতাপাখি

গোদি মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির তোতাপাখি পশ্চিমী মিডিয়াকে 'ইসরাইল সরকারের তোতাপাখি' নামে পরিচয় দেওয়া হয় সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া হাউজের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি একইভাবে ভারতীয় কর্পোরেট মিডিয়া ভারত সরকার তথা 'কর্পোরেট পুঁজির  তোতাপাখি' হিসাবে পরিচয় পাচ্ছে, যাকে নিন্দুকেরা 'গোদী মিডিয়া' নামে অভিহিত করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইল যা বলে, ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া, তোতা পাখির মতো তা-ই প্রচার করে। সাংবাদিকতার প্রধান প্রধান শর্তগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরাইলের দেওয়া তথ্যই তারা প্রচার করে অন্ধ ও নির্লজ্জভাবে। ভারতের ক্ষেত্রেও করপোরেট মিডিয়া বর্তমানে সেটাই করছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, নত মস্তকে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য বিনা বিচারে প্রচার করে চলেছে অধিকাংশ মিডিয়া হাউজ।  অর্থাৎ তাদের সম্প্রচারিত খবরের বড় অংশই হয় নিয়ন্ত্রিত অথবা কখনও কখনও অসত্য - এমন দাবিও করা হয়।  আসলে সিংহভাগ মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন এক-একজন  করপোরেট পুঁজির মালিক বা পুঁজিপতি। এরা কি কখনও নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় - এমন খবর, তথ্য বা তত্ত্ব প্রচার করবে? করবে না, করেও না। আর এ

সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের আয়না

  সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। The face of the minority is the mirror of democracy কোন দেশ কতটা গণতান্ত্রিক, তা বোঝা যায় সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা কতটা মজবুত, তা থেকে। কারণ, সংখ্যালঘুর মুখই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। সংখ্যালঘুরা সঙ্গত কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চেয়ে বেশি বঞ্চনাজনিত মনস্তাত্ত্বিক চাপে থাকে। এই চাপ দু’ভাবে তৈরি হয়। ১) সংখ্যাগিষ্ঠতাজনিত সুবিধা যা সংখ্যাগুরুরা পায়, সংখ্যালঘুরা কখনই তা পায় না বা পাবে না - এই ধারণা, যার কিছুটা হলেও ভিত্তি রয়েছে ২) সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বৃহত্তম (?) জনগোষ্ঠীর অংশ হওয়ার সুবাদে যে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা তৈরি হয় এবং যা বহুজনের মধ্যে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তার ভয়ে। এই চাপ কতটা গভীর তা সংখ্যালঘু ছাড়া বোঝা খুব মুশকিল। তবে আলোকপ্রাপ্ত মানুষ মাত্রই যে তা উপলব্ধি করতে পারেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই ধরণের চাপ তৈরি করে কিছু অসাধু মানুষ যখন সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কমানোর ক্ষমতা একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির হাতেই থাকে