সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শিক্ষা কী, কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে অর্জন করা যায়?

শিক্ষা কী, কেন এবং কীভাবে অর্জন করতে হয়?

    What is education, why it is needed and how to achieve it

    শিক্ষা কী

    শিক্ষা হল এক ধরনের অর্জন, যা নিজের ইচ্ছা শক্তির সাহায্যে নিজে নিজেই নিজের মধ্যে জমা করতে হয়। প্রকৃতি থেকেই সেই অর্জন আমাদের চেতনায় আসে। সেই চেতনাই আমাদের জানিয়ে দেয়, জগৎ ও জীবন পরিচালিত হয় প্রকৃতির কিছু অলংঘনীয় নিয়ম-নীতির দ্বারা। গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ শক্তিকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কাজে লাগালেই এই নিয়মনীতিগুলো আমাদের আয়ত্বে আসে। এই নিয়ম-নীতিগুলো জানা এবং সেই জানার ওপর ভিত্তি করেই জগৎ ও জীবনকে সর্বোত্তম পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার পথ খুঁজে বের করার শক্তি অর্জনই শিক্ষা।

    মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষা কখনও কারও মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না।

    এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষা অর্জনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিটা আসলে কী। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে জানতে হবে, এই শিক্ষার সূচনা হয় কখন এবং কীভাবে?

    শিক্ষার সূচনা কখন হয় :

    এই অর্জনের সূচনা হয় মাতৃগর্ভে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবেই। প্রকৃতির দেওয়া কিছু সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই তার সূচনা। এই সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার পরবর্তী পার্থিব জীবনের শিক্ষা অর্জনের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যায়। মানব শরীরের পূর্ণাঙ্গ অবয়ব তৈরি হবার পর থেকেই শুরু হয় তার এই পথ চলা। মাতৃগর্ভের যে প্রাকৃতিক পরিবেশ, সেখানে একজন শিশু নিজেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে। এই চেষ্টার মাধ্যমেই সে জানান দেয়, সে বেঁচে থাকার নিয়ম শিখছে এবং সেই অনুযায়ী তার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে । 

    একজন মানবশিশু মাতৃগর্ভে জানান দেওয়ার এই কাজটা করে নড়াচড়ার মাধ্যমে। কোন সমস্যা হলে কীভাবে তা তার ধারণকারী মাকে জানাতে হবে, সে সেখান থেকেই শিখে নেয় এবং তা কাজে লাগায়। একইভাবে যখন এই পরিবেশ তার পক্ষে আর সহনশীল থাকে না, তখন সেখান থেকে মুক্তির চেষ্টা করে। নড়াচড়াকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে ও অবস্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে তার মাকে জানায়, তার এই ইচ্ছার কথা। এই সময় সে নিজের মাথাকে উপর থেকে নিচের দিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। তার ফলেই শুরু হয় মায়ের গর্ভযন্ত্রণা। এটা সে করে প্রকৃতির ( ধর্মদর্শন অনুযায়ী ঈশ্বরের ) কাছ থেকে পাওয়া কিছু সহজাত শিক্ষা বা জ্ঞানকে কাজে লাগিয়েই। এই প্রকৃতিরই একটি অংশ হচ্ছে তার মা ও বাবা। জেনেটিক্যালি এই শিক্ষার কিছু অংশ সে পেয়ে থাকে তার মা-বাবার কাছ থেকে।

    সূচনাকালীন শিক্ষার সাফল্য ও ব্যর্থতা  :

    প্রকৃতি থেকে পাওয়া এই সহজাত শিক্ষা বা জ্ঞান যেসমস্ত মানব শিশু যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারে, তারাই স্বাভাবিক ও সুস্থ হয়ে পৃথিবীতে আসতে পারে। যদিও এক্ষেত্রে তার এই অর্জিত শিক্ষা ও তার অর্জিত ফলাফল আরও অনেক পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় তার মা, যার গর্ভে সে অবস্থান করছে।

    আমরা এই পৃথিবীতে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়েও যেমন অনেক সময় ব্যর্থ হই, পারিপার্শ্বিক অনুকূল অবস্থার অনুপস্থিতির কারণে, তেমনি সেও মাতৃগর্ভে অনেক সময় ব্যর্থ হয়। ফলে স্বাভাবিক জন্ম তার আর হয়ে ওঠে না। যেমন ধরুন, আমি পথ চলার সমস্ত নিয়মকানুন জানি এবং তা মেনেও চলছি। তা সত্ত্বেও আমি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলাম। কেন হলাম? কারণ, আমি সব নিয়ম মেনে চললেও গাড়ির চালক অথবা তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির কোন ভুলের কারণেও গাড়িটি আমার উপর আছড়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে আমার অর্জিত শিক্ষা ব্যর্থ হতে বাধ্য। গর্ভে থাকা শিশুর ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে। এক্ষেত্রে অসহায় মৃত্যুবরণ ছাড়া তার আর কিছুই করার থাকে না। 

    আসলে অর্জিত শিক্ষা তখনই সফল হয়, যখন তার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও সেই অর্জনের অনুকূলে থাকে। এককভাবে এ পৃথিবীতে কেউ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। অর্জিত এই শিক্ষার কারণেই সমাজবদ্ধ প্রাণী হিসাবে মানুষ নিজেদের বিবর্তিত করেছে। প্রকৃতির প্রতিটি জীব পরস্পর পরস্পরের উপর নির্ভরশীল - এই শিক্ষা মানুষ প্রকৃতিকে পর্যবেক্ষণ করেই পেয়েছে। তাই প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য হল, প্রকৃতির কাছ থেকে নিজের চেষ্টাতেই এই সব নিয়মকানুন শিখে নেওয়া। জেনে নেওয়া দরকার, বেঁচে থাকা ও সাফল্য অর্জনের জন্য এই অর্জিত শিক্ষাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করার সর্বোৎকৃষ্ট কৌশল। যে তা পারে সে-ই শিক্ষিত।

    যথার্থ শিক্ষা ও তা অর্জনের পদ্ধতি :

    জন্মের পর মানুষ একটু একটু করে বুঝতে পারে, এই চালিকাশক্তি আসলে কিছু অলঙ্ঘনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম। প্রতিদিন সে এই প্রকৃতিকে অর্থাৎ জগৎ ও জীবনকে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে সেখান থেকেই এই নিয়মগুলি অর্জন করতে থাকে। এই অর্জনই হলো শিক্ষা। 

    এখন এই শিক্ষা কতটা সঠিক হবে তা নির্ভর করে মানুষের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের পদ্ধতির যথার্থতার ওপর। পদ্ধতি যথার্থ হবে তখন, যখন তা হবে বিজ্ঞানসম্মত। আর বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রধান ভিত্তি হল যুক্তি, বুদ্ধি, তথ্য ও পর্যবেক্ষণ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা। এই পাঁচটির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। অর্থাৎ আমি যদি জগৎ ও জীবন সম্পর্কে সঠিক সত্য জানতে ( এটাই শিক্ষা ) চাই, তবে কোন বিষয় বা ঘটনা দেখা, শোনা বা অনুমান করার সময় যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্যের সমন্বয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে। বিষয়টিকে আমরা এভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি : আমরা যা দেখি, শুনি বা অনুমান করি তাকে সত্য কিম্বা মিথ্যা বলার আগে তাকে যুক্তি দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে এবং তথ্য দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে, তার সত্যাসত্য যাচাই করে, তবে তা গ্রহণ কিংবা বর্জন করতে হয়। কিছুটা শুনলাম, তারপর নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে, নিজের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাকিটা বসিয়ে নিয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত টেনে দিলাম - এটা সঠিক পদ্ধতি নয়।

    যে মানুষ এই বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রকৃতির এই অলংঘনীয় নিয়মগুলোকে যতটা জানতে পারে, সে ততটাই শিক্ষিত হিসাবে বিবেচিত হয়। তাই প্রকৃতির অলংঘনীয় নিয়ম-কানুন জানা এবং তাকে প্রয়োগ করার কৌশল আয়ত্ত করার ক্ষমতাই হলো শিক্ষা। মনে রাখতে হবে, প্রকৃতির পাঠশালাই হল শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ কলেজ অথবা শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়।

    শিক্ষা অর্জনের উপায় :

    প্রাকৃতিক নিয়ম ছাড়াও শিক্ষার আরো কিছু উপাদান বা উৎস আছে। এদের একটা হল মানুষের সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে কিছু রাষ্ট্রীয় আইন বা নিয়ম। সেগুলো প্রত্যেকটা মানুষকে জানতে হয় এবং মানতে হয়। এ নিয়মও অলংঘনীয়। তাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মেনে চলার চেষ্টাও শিক্ষার অঙ্গ।

    উল্লেখ্য, এই রাষ্ট্রীয় আইন গুলিও কিন্তু প্রকৃতির নিয়মের বাঁধনের মধ্যে থেকেই তৈরি করতে হয়। রাষ্ট্রীয় আইন এই নিয়মের বাইরে গেলেই তৈরি হয় সংকট। আসলে রাষ্ট্রীয় আইন তৈরি করার সময়ও আইন প্রণেতাকে মাথায় রাখতে হয় প্রাকৃতিক নিয়মকেই। প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েই একজন আইন প্রণেতাকে রাষ্ট্রীয় আইন তৈরিতে হাত দিতে হয়।

    যেমন ধরুন, নির্বিচারে গাছ কাটা প্রকৃতির আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। কারণ, এই আইন ভাঙ্গলে একদিকে জীবনদায়ী অক্সিজেনের পরিমাণে ঘাটতি দেখা দেবে। অন্যদিকে অনাবৃষ্টির কারণে মরুভূমির প্রসার ঘটবে। উভয়ই মানুষের জন্য ভয়ংকর। হরপ্পা সভ্যতার পতন তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এখন কোন আইন প্রণেতা এই প্রাকৃতিক আইন না জানলে এবং নির্বিচারে গাছ কেটে শহর ও শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার অধিকার সম্বলিত আইন প্রণয়ন করলে, তা মানুষের জন্য মহাসর্বনাশের কারণ হয়ে উঠবে। সুতরাং আইন প্রণেতার বড় ডিগ্রি থাকলেও তিনি আইন প্রণয়নের যোগ্য নন। কারণ, তিনি শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ।

    এখন প্রশ্ন হল, কোথা থেকে এবং কীভাবে এই শিক্ষা অর্জন সম্ভব? 

    ১) প্রকৃতি থেকে স্বশিক্ষার মাধ্যমে। প্রকৃতিতে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া ঘটনার পর্যবেক্ষণ ও তার কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে।

    ২) একাডেমিক শিক্ষার মাধ্যমে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও এই শিক্ষা আমাদের অর্জন করতে হবে। সিলেবাসের অন্তর্গত সমস্ত বিষয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এবং বুঝে বুঝে পড়তে হবে। যা পড়লাম তার সঙ্গে বাস্তবের সম্পর্ক স্থাপন ও তার প্রয়োগ করতে শিখতে হবে। ভালো রেজাল্ট করার জন্য শুধুই মুখস্ত, কখনোই করা যাবে না।

    ৩) একাডেমিক শিক্ষার শেষ স্তরে পৌঁছানোর পর বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের লেখা বই পড়তে হবে, আমৃত্যু।

    ৪) এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিশেষ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন  শিক্ষত প্রবীণ মানুষের মতামত, জগৎ ও জীবন সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনতে হবে:  সেটা সাক্ষাতকার, বক্তৃতা ইত্যাদি যেকোনো মাধ্যমকে ব্যবহার করে।

    আমাদের সমস্যা কোথায় :

    আমাদের সমস্যা হলো একাডেমিক শিক্ষা শেষ করার মাধ্যমেই আমরা আমাদের শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি ঘটাই। আদতে একাডেমিক শিক্ষার মাধ্যমে যা অর্জন করি তা আসলে শিক্ষা নামক সৌধের একটা ভীত মাত্র। সেখানে না আছে সিঁড়ি না আছে ছাদ। তাই শিক্ষার সৌধে আমাদের আর পৌঁছানো হয় না। আমাদের জানা হয়ে ওঠে না যে এই সৌধে পৌঁছানোর চেষ্টা আমাকে আমৃত্যু করে যেতে হবে।

    আমাদের দ্বিতীয় সমস্যা হল, শিক্ষাকে বিশেষ বিশেষ শ্রেণীতে বিভক্ত করে একটিকে পূর্ণাঙ্গ এবং শ্রেষ্ঠ হিসেবে ভাবা। আমরা একটি বিশেষ বিষয়কে কেন্দ্র করে পড়াশোনাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলি এবং অন্য বিষয়গুলোকে গুরুত্বহীন ভেবে আত্মশ্লাঘায় নিমগ্ন থাকি। আমাদের বোঝা হয়ে ওঠে না যে, জগতের সমস্ত বিষয়ই পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং নির্ভরশীল।

    পরিণতি :

    ফলে একাডেমিক শিক্ষার মাধ্যমে যা আমরা অর্জন করি তা হল খন্ড শিক্ষা। তাই এমএ এমএসসি এম কম বা বিভিন্ন পেশাগত ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে মস্ত বড় শিক্ষিত বলে ভুল করি। এই ভুল আমাদেরকে অর্ধশিক্ষিত বানিয়ে রাখে এবং পন্ডিত মূর্খে পরিণত করে। কোন জাতির সিংহভাগ মানুষ যদি এই অর্ধশিক্ষায় শিক্ষিত হয়, তবে তার বিশ্বজগতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সামর্থ্য কখনোই হবে না।
    • লেখাটি সম্পূর্ণ হয় নি। লেখার কাজ চলছে ….। অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন।

    মন্তব্যসমূহ

    📂 আলী হোসেনের জনপ্রিয় প্রবন্ধগুলি

    হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল?

    হিন্দু কারা? কীভাবে তারা হিন্দু হল? যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ হিন্দু হলেন কবে থেকে? অবাক হবেন তাই তো? কিন্তু আমি হবো না। কারণ, তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয়ই নন, ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং ‘শাহ’ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি। লালকৃষ্ণ আদবানির নামও শুনেছেন আপনি। মজার কথা হল আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ ‘আদবান’ থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর পদবীও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। ভাষাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের বিশ্লেষণ বলছে, উচ্চবর্ণের বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মানুষদের, উৎসভূমি হল পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল। তারও আগে ছিল ইউরোপের ককেশাস অঞ্চলে। আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। তারা নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন এবং এই পরিচয়ে তারা গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ ধরে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এসে এদেরই উত্তরসূরী ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) অর্থাৎ পারস্যের কিছু পর্যটক-ঐতিহাসিক, এদেশের আদিম অধিবাসীদের ’হিন্দু’ বলে অভিহিত করেছেন তাদের বিভিন্ন ভ্রমণ বৃত্তান্তে।

    রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন

    রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন আলী হোসেন  যদি প্রশ্ন করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধর্ম কী? মনে হয় অনেকেই ঘাবড়ে যাবেন। কেউ বলবেন, তাঁর বাবা যখন ব্রাহ্ম ছিলেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই ব্রাহ্ম। যারা লেখাপড়া জানেন না, তারা বলবেন, কেন! উনি তো হিন্দু ছিলেন। আবার কেউ কেউ তথ্য সহযোগে এও বলার চেষ্টা করবেন যে, উনি নাস্তিক ছিলেন; না হলে কেউ বলতে পারেন, ধর্মমোহের চেয়ে নাস্তিকতা অনেক ভালো? ¹ রবীন্দ্রনাথের ধর্ম ভাবনার বিবর্তন  তাহলে সঠিক উত্তরটা কী? আসলে এর কোনোটাই সঠিক উত্তর নয়। চিন্তাশীল মানুষ-মাত্রই সারা জীবন ধরে ভাবেন, ভাবতে ভাবতে তাঁর উপলব্ধি বাড়তে থাকে ক্রমশঃ প্রগতির পথে। জগৎ ও জীবন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একে একে গড়ে তোলেন নিত্যনতুন জীবনদর্শন। তাই এ ধরনের মানুষ আজীবন এক এবং অখণ্ড জীবনদর্শনের বার্তা বহন করেন না। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাঁর পথচলার গতিমুখ। মানুষ রবীন্দ্রনাথও তাই পাল্টে ফেলেছেন তাঁর জীবন ও ধর্মদর্শন সময়ের বয়ে যাওয়াকে অনুসরণ করে। রবীন্দ্রনাথ ও  হিন্দু জাতীয়তাবাদ ১৮৬১ সালের ৭ই মে সোমবার রাত্রি ২টা ৩৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এর

    সীমান্ত আখ্যান, বাঙালির আত্মানুসন্ধানের ডিজিটাল আখ্যান

    সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ করছে (রাজনীতিকরা) আর কেউ কুফল (জনগন)। 'সীমান্ত আখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দে

    ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি

    ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি - লিখছেন আলী হোসেন  কপালের লেখন খণ্ডায় কার সাধ্য? জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কিংবা লেখাপড়া জানা-নাজানা নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের সিংহভাগই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই কথাটা মেনে নেয়। জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে কপালের লেখনকে জায়গা করে দিতে তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। বরং বলা ভালো এব্যাপারে তারা অতিমাত্রায় উদার। মানুষের মনস্তত্বের এ-এক জটিল স্তর বিন্যাস। একই মানুষ বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণে ভিন্নভিন্ন দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে। এ রকমই একটি দৃষ্টিকোণ হলো কপাল বা ভাগ্যের ভূমিকাকে সাফল্যের চাবিকাঠি বলে ভাবা। কখনও সে ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, আবার কখনও নিজেই ভাগ্যের কাছে নির্দিধায় আত্ম সমর্পন করে। নিজের ব্যার্থতার পিছনে ভাগ্যের অদৃশ্য হাতের কারসাজির কল্পনা করে নিজের ব্যার্থতাকে ঢাকা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। মজার কথা, এক্ষেত্রে মুসলিম মানসের মনস্তত্ত্ব কখনও চেতনমনে আবার কখনও অবচেতন মনে উপরওয়ালাকে (আল্লাহকে) কাঠ গড়ায় তোলে বিনা দ্বিধায়। নির্দিধায় বলে দেয়, উপরওয়ালা রাজি না থাকলে কিছুই করার থাকেনা। সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা সবই তাঁর (আল্লার

    কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী

    কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণের ভাগ্যলিপিতে লেখা হয়ে গেছে এই বিখ্যাত প্রবাদটির বিস্তারিত সারাৎসার। একদিকে পাকিস্তান আর অন্যদিকে ভারত – এই দুই প্রতিবেশি দেশের ভুরাজনৈতিক স্বার্থের যাঁতাকলে পড়ে তাদের এই হাল। কিন্তু কেন এমন হল? এই প্রশ্নের উত্তর জানে না এমন মানুষ ভুভারতে হয়তো বা নেই। কিন্তু সেই জানার মধ্যে রয়েছে বিরাট ধরণের ফাঁক। সেই ফাঁক গলেই ঢুকেছে কাশ্মির ফাইলসের মত বিজেপির রাজনৈতিক ন্যারেটিভ যা তারা বহুকাল ধরে করে চলেছে অন্য আঙ্গিকে। এবার নতুন মাধ্যমে এবং নবরূপে তার আগমন ঘটেছে, যায় নাম সিনেমা বা সেলুলয়েড প্রদর্শনী। যদিও ডিজিটাল মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সৌজন্যে অনেক আগেই সফলভাবে তারা এই ন্যারেটিভ দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। টেলিভিশন সম্প্রচারে কর্পোরেট পুজির অনুপ্রবেশের মাধ্যমে যার সূচনা হয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তিকে কুক্ষিগত করতে না পারলে দেশের সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব নয়, একথা সাধারণ নিরক্ষর নাগরিক এবং ত

    জল, না পানি : জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয়

    জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয় আলী হোসেন  সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে চিত্র শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য পানি শব্দকে বাংলা নয় বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, "আমরা কোনোদিন কখনও বাংলা ভাষায় পানি (শব্দটা) ব্যবহার করি না"। শুধু তা-ই নয়, পানি শব্দের ব্যবহারের মধ্যে তিনি 'সাম্প্রদায়িকতার ছাপ'ও দেখতে পেয়েছেন। প্রশ্ন হল - এক, এই ভাবনা কতটা বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাস্থ্যকর এবং কতটা 'বাংলা ভাষার ইতিহাস' সম্মত? দুই, জল বা পানি নিয়ে যারা জলঘোলা করছেন তারা কি বাংলাকে ভালোবেসে করছেন? মনে হয় না। কারণ, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এরা কেউ নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াননি বা পড়ান না। ব্যবহারিক জীবনেও তারা বাংলার ভাষার চেয়ে ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে বা গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, বলা ভালো গর্ববোধ করেন। প্রসংগত মনে রাখা দরকার, বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোতে যারা ভর্তি হয়, তারা অধিকাংশই গরীব ঘরের সন্তান। বলা ভালো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারাই বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কারণ, সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়ানোর পাশাপাশি, বা

    নিম্নবর্গের মানুষ মার খাচ্ছে কেন

    নিম্নবর্গের মানুষ কীভাবে পিছিয়ে পড়েছেন? সমাধান কীভাবে? এদেশের নিম্নবর্গের মানুষ নিজেদের বাঁচাতে যুগ যুগ ধরে ধর্ম পরিবর্তন করেছে। কখনও বৌদ্ধ (প্রাচীন যুগ), কখনও মুসলমান (মধুযুগ), কিম্বা কখনো খ্রিস্টান (আধুনিক যুগ) হয়েছে। কিন্তু কখনই নিজেদের চিন্তা-চেতনাকে পাল্টানোর কথা ভাবেনি। পরিবর্তন হচ্ছে অলংঘনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম। যারা এই নিয়ম মেনে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে, তারাই লাভবান হয়, টিকে থাকে। “পাল্টে গেলেই জীবন বাড়ে না পাল্টালে নয়, জীবন মানেই এগিয়ে যাওয়া নইলে মৃত্যু হয়” জীবনের এই চরম সত্য তারা অধিকাংশই উপলব্ধি করতে পারেনি। পৃথিবীর যেকোন উন্নত জাতির দিকে তাকান, তারা দ্রুততার সঙ্গে এই পরিবর্তনকে মেনে নিজেদেরকে পুনর্গঠন করে নিয়েছে। যারা পারেনি বা নেয়নি তারাই মার খাচ্ছে, অতীতেও খেয়েছে। বুদ্ধিমান জাতি নিজের দুর্বলতাকে মেনে নেয় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সময়ের সঙ্গে তাল রেখে নিজেদের চিন্তা এবং চেতনায় পরিবর্তন আনে। খ্রিষ্টান, ইহুদি-সহ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন জাতি - যারাই এই পরিবর্তন মেনে নিয়েছে তারাই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মহানবীর (সঃ) গৌরবময় উত্থান (যা এক ধরণ

    আধুনিক মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির (পুঁজিপতিদের) তোতাপাখি

    গোদি মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির তোতাপাখি পশ্চিমী মিডিয়াকে 'ইসরাইল সরকারের তোতাপাখি' নামে পরিচয় দেওয়া হয় সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া হাউজের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি একইভাবে ভারতীয় কর্পোরেট মিডিয়া ভারত সরকার তথা 'কর্পোরেট পুঁজির  তোতাপাখি' হিসাবে পরিচয় পাচ্ছে, যাকে নিন্দুকেরা 'গোদী মিডিয়া' নামে অভিহিত করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইল যা বলে, ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া, তোতা পাখির মতো তা-ই প্রচার করে। সাংবাদিকতার প্রধান প্রধান শর্তগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরাইলের দেওয়া তথ্যই তারা প্রচার করে অন্ধ ও নির্লজ্জভাবে। ভারতের ক্ষেত্রেও করপোরেট মিডিয়া বর্তমানে সেটাই করছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, নত মস্তকে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য বিনা বিচারে প্রচার করে চলেছে অধিকাংশ মিডিয়া হাউজ।  অর্থাৎ তাদের সম্প্রচারিত খবরের বড় অংশই হয় নিয়ন্ত্রিত অথবা কখনও কখনও অসত্য - এমন দাবিও করা হয়।  আসলে সিংহভাগ মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন এক-একজন  করপোরেট পুঁজির মালিক বা পুঁজিপতি। এরা কি কখনও নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় - এমন খবর, তথ্য বা তত্ত্ব প্রচার করবে? করবে না, করেও না। আর এ

    সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের আয়না

      সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। The face of the minority is the mirror of democracy কোন দেশ কতটা গণতান্ত্রিক, তা বোঝা যায় সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা কতটা মজবুত, তা থেকে। কারণ, সংখ্যালঘুর মুখই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। সংখ্যালঘুরা সঙ্গত কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চেয়ে বেশি বঞ্চনাজনিত মনস্তাত্ত্বিক চাপে থাকে। এই চাপ দু’ভাবে তৈরি হয়। ১) সংখ্যাগিষ্ঠতাজনিত সুবিধা যা সংখ্যাগুরুরা পায়, সংখ্যালঘুরা কখনই তা পায় না বা পাবে না - এই ধারণা, যার কিছুটা হলেও ভিত্তি রয়েছে ২) সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বৃহত্তম (?) জনগোষ্ঠীর অংশ হওয়ার সুবাদে যে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা তৈরি হয় এবং যা বহুজনের মধ্যে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তার ভয়ে। এই চাপ কতটা গভীর তা সংখ্যালঘু ছাড়া বোঝা খুব মুশকিল। তবে আলোকপ্রাপ্ত মানুষ মাত্রই যে তা উপলব্ধি করতে পারেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই ধরণের চাপ তৈরি করে কিছু অসাধু মানুষ যখন সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কমানোর ক্ষমতা একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির হাতেই থাকে