মানুষ জন্মগতভাবে সাম্প্রদায়িক হয়না।
(খোলা চিঠির উত্তর)
এত চেতনা যদি জনগনের থাকতো, আর তারা সেটা বিবেচনায় রেখে ভোট দিতেন, তবে ১৮ টা আসন বিজেপি পেত না, পেত বামপন্থীরা। কারণ বিজেপি তৃণমূলের প্রকৃত বিকল্প নয়। যে দোষগুলো আপনি দেখালেন তার ৯০ শতাংশই সঠিক। এবং আপনার চশমা বদল করলেই দেখতে পাবেন, বা একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন এই দোষগুলোই বিজেপির মধ্যে আরও ভয়ংকর ভাবে আছে। যেগুলো আপনি কৌশলে এড়িয়ে গেলেন।
তাই জনগন সঠিক বিকল্প ভাবেন নি। জনগনের বড় অংশ ধর্মীয় চশমা পরে ভোট দিয়েছেন। হিন্দু ধর্মের মানুষ বিজেপিকে বিকল্প ভেবেছেন, আর সংখ্যালঘুরা শাসক দলকে। নির্দিষ্টভাবে মেরুকরণ হয়েছে। বামপন্থীরা বুঝে হোক বা না বুঝে হোক এই বিষয়ে মুখ বুজে থেকেছেন। এটা তাদের আরও একটা ঐতিহাসিক ভুল।
এখানে একটা কথা বলি। সন্ত্রাসবাদ আর সাম্প্রদায়িকতা আলাদা জিনিস। সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িক হয় প্রধানতঃ লোভে আর স্বার্থ হারানোর মিথ্যা ভয়ে, আর সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক হয় প্রধানতঃ জীবন ও সম্পত্তি হারানোর ভয়ে। আর মজার ব্যাপার হল দুটোই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের ফসল। সাধারণ মানুষ জন্মগতভাবে সাম্প্রদায়িক হয়না। শাসকরা নিজেদের স্বার্থে তাদের সাম্প্রদায়িক করে তোলে। এক্ষেত্রে বিজেপি তৃণমূলের চেয়ে উপরে। নিচে অন্যরা। আপনি মানুন আর না মানুন। এটাই সত্যি।
তবে শেষে যে উপদেশ আপনি দিয়েছেন তা একশ শতাংশ ঠিক। এটাও ঠিক যে আপনি নিজেকে নিরপেক্ষ বললেও আসলে আপনি একটি বিশেষ দলের পক্ষ নিয়েছেন। এই পক্ষ নেওয়ার অধিকার আপনার আছে। কারণ, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক মতাদর্শের স্বীকৃতি রয়েছে এদেশের সংবিধানে।
আসলে দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বড়ই অসহায়। তারা প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আসতে পারেন না। তাদের শত্রু-মিত্র চেনার সত্যিই কোনো ক্ষমতা নেই। রাজনৈতিক দলগুলি যার অধিকাংশই দেশের ধনিকশ্রেণীর দ্বারা পরোক্ষে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, তারা জনসাধারণকে কখনই প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আসতে দেন না। খুব ভেবেচিন্তেই তারা এই শ্রেণির মানুষকে ধর্মান্ধ করে রাখার চক্রান্ত করেন। আর তাদের হাতে অত্যাধুনিক মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ থাকায় খুব সহজেই এই কাজটা তারা করতে পারছেন। এই চক্রের কবল থেকে সহজে মুক্তি আসবে না।
খোলা চিঠি পড়ুন এখানে ক্লিক করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন