সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তালিবান উত্থানের নেপথ্য : আমেরিকার দায় ও দায়িত্ব

তালিবান উত্থানের নেপথ্য : আমেরিকার দায় ও দায়িত্ব
আলী হোসেন

সভ্যতার সূচনালগ্নে মানুষ প্রায় অন্যান্য প্রাণীদের মতই জীবন-ধারণ করত। বেঁচে থাকার জন্য অন্যদের মতই খাদ্য সংগ্রহ ও জীবনের নিরাপত্তা বিধানই ছিল তাদের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু অন্য প্রাণীদের তুলনায় মানুষের চিন্তন ক্ষমতা ও দৈহিক গঠন উন্নত হওয়ায়, তাকে কাজে লাগিয়ে খাদ্য উৎপাদন শুরু করে তারা। এই সূত্রেই জন্ম নেয় ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা। সম্পত্তির উপর অধিকার কায়েম করতে গিয়েই বাধে গোষ্ঠী-লড়াই। জন্ম হয় রাজনীতি তথা রাজনৈতিক ক্ষমতার। এই ক্ষমতার লড়াইয়ে জয়লাভ করেছে সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তি-গোষ্ঠী, যার পেশী ও মাথার জোর ছিল বেশী।

লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনের পথ বেয়ে সেই রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বন্দ্বই আজ বর্তমান চেহারা নিয়েছে। আসলে মানব সভ্যতার ইতিহাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এই ক্ষমতা দখলের লড়াই।

অন্যদিকে উন্নত চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বোঝার চেষ্টা করেছে, জগত ও জীবনের রহস্য উদ্ঘটনের। জানার চেষ্টা করেছে, সে কোথা থেকে এল, কেন সে রোগাক্রান্ত হয়, কেনই-বা মারা যায়। কেন প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়? এগুলোর থেকে মুক্তিরই বা উপায় কী?

এই প্রশ্নেই মানুষকে দুভাগে ভাগ হয়ে যেতে দেখছি ইতিহাসের পাতায়। এক পক্ষ তাদের গভীর পর্যবেক্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে খুঁজে পেয়েছেন কার্য-কারণ সম্পর্কের। এই সম্পর্কের মূল কথা হল জগতের সমস্ত ঘটনার পিছনে রয়েছে কোন-না-কোন লৌকিক, জাগতিক কিম্বা মহাজাগতিক কারণ, যার সবই বস্তুগত। এরা হলেন বিজ্ঞানমনস্ক, প্রগতিশীল, যুক্তিবাদি মানুষ। এদের হাত ধরেই জন্ম নিয়েছে বিজ্ঞান।

অন্য পক্ষ জাগতিক রহস্যের পিছনে দেখেছেন, অলৌকিক শক্তির হাত। তাকেই নিয়ন্ত্রনকারী ধরে নিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য শুরু করে প্রকৃতি পূজা তথা মূর্তিপূজা। মানব প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য হল, সহজ ও অনায়াসে সাফল্য লাভের প্রতি অদম্য টান। সেই টানই অলৌকিক শক্তির প্রতি আসক্ত করে তোলে মানুষকে। এদেরই কল্পনায় প্রথম জন্ম হয় ধর্ম, ঈশ্বর, ধর্মগুরু ও ধার্মীকের। রোগের কারণ খুঁজে তা থেকে মুক্তির চেয়ে কল্পিত শক্তিকে খুশি করে মুক্তির চেষ্টা অনেক সহজ ও দ্রুত ভেবে সংখ্যাগুরু মানুষ ধর্ম আর ধর্মগুরুর স্মরণাপন্ন হতে শুরু করে।

রাজনৈতিক ক্ষমতালোভীদের হাতে চলে আসে আরও এক নতুন অস্ত্র। মানুষকে নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখার ও আনার কাজে পেশীশক্তি ও বৌদ্ধিক শক্তির সাথে যুক্ত হয় ধর্ম তথা ধর্ম-সংগঠন। শুরু হয় মানব সভ্যতার ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। যিনি ধর্মগুরু, তিনিই বনে যান রাষ্ট্রগুরু। ইতিহাস বলছে, এই উদ্দেশ্যেই ৩৩০০ বছর আগের চতুর্থ আমেনহোটেপ মিশরে বহুত্ববাদের জায়গায় নিয়ে আসেন একেশ্বরবাদ। দেবতা আমুন এর জায়গার আনলেন সূর্যদেবতা ‘আটেন’কে । নিজের নাম রাখলেন আখেনাটেন অর্থাৎ ঈশ্বর আটেনের পুত্র। লক্ষ্য একটাই। নিজের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করা।

ইউরোপীয় নবজাগরণের হাত ধরে, ধর্ম আর রাজনীতি আলাদা হয়। কিন্তু বিশ্বের বাকি অংশের অনেক জায়গায় এখনও প্রত্যক্ষ কিম্বা পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতালোভীরা ধর্মকেই কাজে লাগাচ্ছে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসাবে। আল-কায়দা থেকে আইএসআইএস কিংবা আজকের বিশ্বরাজনীতি তোলপাড় করা তালিবানরা সেই কাজটাই করছে। মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেককে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে্ তারাও।

তবে এদের উত্থানের ইতিহাস বেশ জটিল। ইসলামের আবির্ভাবের আগের এক হাজার বছর ধরে আরব দুনিয়া ছিল ‘অন্ধকারময় যুগ’ (আইয়াম-এ-জাহেলিয়াত)। হযরত মহম্মদ (স:) এই যুগের অবসান চেয়েছিলেন। দীর্ঘ চল্লিশ বছরের কর্মময় জীবন তাঁকে শিখিয়েছিল ‘সব মানুষই সমান এবং যে ব্যাক্তি ঈশ্বরের একান্ত অনুগত ও যিনি মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করেন তিনিই শ্রেষ্ঠ মানুষ’। এখানে ঈশ্বরের উল্লেখ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মহম্মদ উপলব্ধি করেছিলেন, অন্ধকার থেকে আলোয় আসতে গেলে দরকার সমাজ বিপ্লব, যা করতে দরকার মানুষের নিঃশর্ত সমর্থন।

এই সমর্থন পেতে তিনটি বিষয় ছিল খুবই জরুরী। ১) নতুন ধর্মদর্শন, যা মানুষের জন্য কল্যানকামী হবে ২) নিজেকে ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার কথা প্রচার করা। (এ কারণেই তিনি তার বক্তব্যে ‘ঈশ্বরের একান্ত অনুগত’ কথাটি ব্যবহার করেছেন এবং নিজেকে নবী বা ‘আল্লার বার্তাবাহক’ বলে দাবী করেছেন)। ৩) পুরানো ব্যবস্থা ভাঙতে দরকার রাষ্ট্রশক্তি তথা রাজনৈতিক ক্ষমতা, যা একান্তই জনসমর্থনের উপর নির্ভরশীল। এই তিন প্রয়োজনেই তাঁর হাত ধরে ইসলাম আত্মপ্রকাশ করে নতুন এক মানবিক চেহারায়। অর্থাৎ সমাজের প্রয়োজনে রাজনৈতিক ক্ষমতা আর রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োজনে নতুন ধর্মদর্শনের স্বরণাপন্ন হলেন তিনিও।

কিন্তু মহম্মদের মৃত্যুর পর আস্তে আস্তে পরিবর্তন এসেছে এই সূত্রের । ইতিহাস বলছে, নানা টানাপোড়েনের মধ্যেও চারজন খলিফা তাঁর লক্ষ্যটাকে মোটামুটি ঠিক রাখতে পেরেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে মহম্মদের (স:) তৈরি এই সূত্রও পাল্টে যায়। ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, যা ইসলামের ভিত্তিকে দৃঢ় করেছিল, তাও আস্তে আস্তে বেমালুম উবে যায় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক আকাশ থেকে। জন্ম হয় নতুন সূত্রের.. ব্যক্তির আর্থিক ক্ষমতার প্রয়োজনে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করা প্রয়োজন, আর রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের প্রয়োজনে ধর্মের ব্যবহার প্রয়োজন। অর্থাৎ সমাজের পরিবর্তে ব্যক্তির আর্থিক প্রয়োজনই গুরুত্ব পেতে শুরু করে এই সময় থেকে।

আর এই নতুন সূত্রের কারণেই ইসলামী ধর্মদর্শন তথা রাষ্ট্র-দর্শন প্রথমে শিয়া-সুন্নি এবং পরে আরও অনেক ভাগে বিভক্ত হয়েছে, হয়েছে বিকৃত। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যই তা করা হয়েছে।

তালিবান, আল-কায়দা, কিম্বা আইএসআইএস, এদের উৎপত্তির ইতিবিত্ত লুকিয়ে রয়েছে এই নয়া সূত্রের মধ্যেই। এর মধ্যেই রয়েছে ১) শিয়া-সুন্নির আধিপত্যের লড়াই, ২) রয়েছে এই লড়াইকে কাজে লাগিয়ে ইউরোপীয় ও আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মধ্যপ্রাচ্যে নয়া সাম্রাজ্যবাদ কায়েম করার ষড়যন্ত্র এবং ৩) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলার চক্রান্ত।

এই লক্ষ্যেই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াই করার ও তৎকালীন সোভিয়েত সমর্থিত বামপন্থী নজিবুল্লাহ সরকারকে উৎখাত করার জন্য আমেরিকা পাকিস্তানের শরাণার্থী শিবিরের তরুণদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়। সহযোগিতা করে পাকিস্তান। এই তরুণরা বেশিরভাগই ছিল মাদ্রাসার ছাত্র অর্থাৎ তালেব। এরা মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই দুর্ধর্ষ যোদ্ধা বাহিনীতে পরিণত হয়ে অতি দ্রুত পুরো আফগানিস্তান দখল করে তালেবানি শাসন কায়েম করে। নেতৃত্বে ছিলেন মোল্লা মহম্মদ উমর । সাহায্যে এগিয়ে আসে আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন, যার পিছনে মদতদাতা আমেরিকা। কী বিপুল পরিমাণ অর্থ আমেরিকা এই কাজে ব্যয় করেছিল তা জানা যায় ভয়েস অব আমেরিকার কলকাতা সংবাদদাতা গৌতম গুপ্তের একটি প্রতিবেদন থেকে। ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন এক রকম বাধ্য হয়ে ১৯৯৬ সালে আফগানিস্থান ত্যাগ করে। শুরু হয় তালিবান শাসন।

এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। সোভিয়েতের ভাঙনের পর লাদেনের প্রয়োজন ফুরিয়ে আসে। লাদেন ফিরে আসে সৌদি আরব। এবার নজর দেয় ফিলিস্তিনীদের সমর্থনে, ইসরাইলের বিপক্ষে। ইসরাইল হল মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার আধিপত্য কায়েমের রক্ষাকবচ। ফলে বেঁকে বসে আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে মোল্লা উমরকে লাদেনের বিরুদ্ধে যাওয়ার নির্দেশ আসে। উমর তা অস্বীকার করলে নিজের হাতে তৈরি তালিবান গোষ্ঠীও চলে আসে আমেরিকার খতম তালিকায় । এই ঘটনাক্রম এবং উমর-লাদেনের বিদ্রোহী আত্মা আমেরিকার ঘুম কেড়ে নেয়। শুরু হয় লাদেন ও মোল্লা উমরের বিরুদ্ধে নতুন পরিকল্পনা। যার পরিণতি ২০০১ সালে আফগানিস্থানে তালিবান জমানার সমাপ্তি এবং পরবর্তীতে লাদেনের মৃত্যু।

তালিবান ও আল-কায়দাকে কখনও দ্বিমুখী, কখনও ত্রিমুখী কাজে ব্যবহার করে আসছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। প্রথমতঃ ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে এক শ্রেণীর যুবককে শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, দ্বিতীয়তঃ এই উদ্দেশ্য হাসিলের পর সরলমনা ধর্মপ্রাণ যুবকদের ইসলামের নামে ধর্মান্ধতার মধ্যে ঠেলে দিয়ে ও জঙ্গিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যবহার করে বিশ্ববাসীর কাছে ইসলাম সম্পর্কে আতঙ্ক ও খারাপ ধারণা ছড়িয়ে দেয়া এবং তৃতীয়তঃ এদেরকে সন্ত্রাসী তৎপরতায় ব্যবহার করে, সেই একই সন্ত্রাস দমনের নামে দেশে দেশে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করা। ২০০১ সাল থেকে আমেরিকা এই ভূমিকায় নিয়োজিত থেকেছে আফগান ভূমিতে। গত ১৮ ই আগস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কথাতেই তা পরিষ্কার হয়ে ওঠে, “আমরা আফগানিস্থানে দেশ পুনর্গঠনের জন্য যাই নি, গিয়েছি আমেরিকার সার্থে”।

আজ আমেরিকা আফগানিস্থান ছাড়ছে স্বার্থ ফুরিয়েছে বলেই। কিন্তু অন্য কোন চাল যে তার মাথায় ঘুরছে না, জোর দিয়ে বলা মুশকিল। তবে ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতা এবং আফগান জাতির অদম্য স্বাধীনচেতা মনোভাব যা ১৮৩৮, ১৯৯৭ এবং ২০০১ থেকে যথাক্রমে ব্রিটিশ, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং আমেরিকা দেখে আসছে, তা তাকে ভাবাবে নিশ্চয়ই।

--------------------------

মন্তব্যসমূহ

📂 আলী হোসেনের জনপ্রিয় প্রবন্ধগুলি

হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল?

হিন্দু কারা? কীভাবে তারা হিন্দু হল? যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ হিন্দু হলেন কবে থেকে? অবাক হবেন তাই তো? কিন্তু আমি হবো না। কারণ, তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয়ই নন, ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং ‘শাহ’ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি। লালকৃষ্ণ আদবানির নামও শুনেছেন আপনি। মজার কথা হল আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ ‘আদবান’ থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর পদবীও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। ভাষাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের বিশ্লেষণ বলছে, উচ্চবর্ণের বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মানুষদের, উৎসভূমি হল পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল। তারও আগে ছিল ইউরোপের ককেশাস অঞ্চলে। আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। তারা নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন এবং এই পরিচয়ে তারা গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ ধরে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এসে এদেরই উত্তরসূরী ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) অর্থাৎ পারস্যের কিছু পর্যটক-ঐতিহাসিক, এদেশের আদিম অধিবাসীদের ’হিন্দু’ বলে অভিহিত করেছেন তাদের বিভিন্ন ভ্রমণ বৃত্তান্তে।

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন

রবীন্দ্রনাথের ধর্মভাবনা ও তার বিবর্তন আলী হোসেন  যদি প্রশ্ন করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধর্ম কী? মনে হয় অনেকেই ঘাবড়ে যাবেন। কেউ বলবেন, তাঁর বাবা যখন ব্রাহ্ম ছিলেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই ব্রাহ্ম হবেন। যারা লেখাপড়া জানেন না, তারা বলবেন, কেন! উনি তো হিন্দু ছিলেন। আবার কেউ কেউ তথ্য সহযোগে এও বলার চেষ্টা করবেন যে, উনি নাস্তিক ছিলেন। না হলে কেউ বলতে পারেন, ধর্মমোহের চেয়ে নাস্তিকতা অনেক ভালো?¹ রবীন্দ্রনাথের ধর্ম ভাবনার বিবর্তন  তাহলে সঠিক উত্তরটা কী? আসলে এর কোনোটাই সঠিক উত্তর নয়। চিন্তাশীল মানুষ-মাত্রই সারা জীবন ধরে ভাবতে থাকেন। ভাবতে ভাবতে তাঁর উপলব্ধি এগোতে থাকে ক্রমশঃ প্রগতির পথে। এই সময়কালে জগৎ ও জীবন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একে একে গড়ে তোলেন জীবনদর্শনের নিত্যনতুন পর্ব। তাই এ ধরনের চিন্তাশীল মানুষ আজীবন এক এবং অখণ্ড জীবনদর্শনের বার্তা বহন করেন না। সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যায় তাঁর পথচলার গতিমুখ, গড়ে ওঠে উন্নততর জীবন দর্শন। মানুষ রবীন্দ্রনাথও তাই পাল্টে ফেলেছেন তাঁর জীবন ও ধর্মদর্শন; সময়ের এগিয়ে যাওয়াকে অনুসরণ করে। রবীন্দ্রনাথ ও  হিন্দু জাতীয়তাবাদ ১৮৬১ সালের ৭ই মে সোমবার রাত্রি ২টা ৩৮ মিনিট ৩৭ সেকেন

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি

ভাগ্য : মুসলিম মনস্তত্ত্ব, ধর্মদর্শন ও প্রগতি - লিখছেন আলী হোসেন  কপালের লেখন খণ্ডায় কার সাধ্য? জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কিংবা লেখাপড়া জানা-নাজানা নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের সিংহভাগই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই কথাটা মেনে নেয়। জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে কপালের লেখনকে জায়গা করে দিতে তারা কুণ্ঠাবোধ করে না। বরং বলা ভালো এব্যাপারে তারা অতিমাত্রায় উদার। মানুষের মনস্তত্বের এ-এক জটিল স্তর বিন্যাস। একই মানুষ বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণে ভিন্নভিন্ন দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে। এ রকমই একটি দৃষ্টিকোণ হলো কপাল বা ভাগ্যের ভূমিকাকে সাফল্যের চাবিকাঠি বলে ভাবা। কখনও সে ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, আবার কখনও নিজেই ভাগ্যের কাছে নির্দিধায় আত্ম সমর্পন করে। নিজের ব্যার্থতার পিছনে ভাগ্যের অদৃশ্য হাতের কারসাজির কল্পনা করে নিজের ব্যার্থতাকে ঢাকা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। মজার কথা, এক্ষেত্রে মুসলিম মানসের মনস্তত্ত্ব কখনও চেতনমনে আবার কখনও অবচেতন মনে উপরওয়ালাকে (আল্লাহকে) কাঠ গড়ায় তোলে বিনা দ্বিধায়। নির্দিধায় বলে দেয়, উপরওয়ালা রাজি না থাকলে কিছুই করার থাকেনা। সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা সবই তাঁর (আল্লার

সীমান্ত আখ্যান, বাঙালির আত্মানুসন্ধানের ডিজিটাল আখ্যান

সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ করছে (রাজনীতিকরা) আর কেউ কুফল (জনগন)। 'সীমান্ত আখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দে

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী

কাশ্মীর ফাইলস : প্রপাগান্ডার এক নয়া ব্রান্ড, কর্পোরেট পুঁজি ও রাজনৈতিক দলের গলাগলির এক সুচারু প্রদর্শনী রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণের ভাগ্যলিপিতে লেখা হয়ে গেছে এই বিখ্যাত প্রবাদটির বিস্তারিত সারাৎসার। একদিকে পাকিস্তান আর অন্যদিকে ভারত – এই দুই প্রতিবেশি দেশের ভুরাজনৈতিক স্বার্থের যাঁতাকলে পড়ে তাদের এই হাল। কিন্তু কেন এমন হল? এই প্রশ্নের উত্তর জানে না এমন মানুষ ভুভারতে হয়তো বা নেই। কিন্তু সেই জানার মধ্যে রয়েছে বিরাট ধরণের ফাঁক। সেই ফাঁক গলেই ঢুকেছে কাশ্মির ফাইলসের মত বিজেপির রাজনৈতিক ন্যারেটিভ যা তারা বহুকাল ধরে করে চলেছে অন্য আঙ্গিকে। এবার নতুন মাধ্যমে এবং নবরূপে তার আগমন ঘটেছে, যায় নাম সিনেমা বা সেলুলয়েড প্রদর্শনী। যদিও ডিজিটাল মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সৌজন্যে অনেক আগেই সফলভাবে তারা এই ন্যারেটিভ দিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করে চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। টেলিভিশন সম্প্রচারে কর্পোরেট পুজির অনুপ্রবেশের মাধ্যমে যার সূচনা হয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তিকে কুক্ষিগত করতে না পারলে দেশের সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব নয়, একথা সাধারণ নিরক্ষর নাগরিক এবং ত

শিক্ষা কী, কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে অর্জন করা যায়?

শিক্ষা কী, কেন এবং কীভাবে অর্জন করতে হয়? সূচিপত্র : What is education, why it is needed and how to achieve it শিক্ষা কী শিক্ষা হল এক ধরনের অর্জন, যা নিজের ইচ্ছা শক্তির সাহায্যে নিজে নিজেই নিজের মধ্যে জমা করতে হয়। প্রকৃতি থেকেই সেই অর্জন আমাদের চেতনায় আসে। সেই চেতনাই আমাদের জানিয়ে দেয়, জগৎ ও জীবন পরিচালিত হয় প্রকৃতির কিছু অলংঘনীয় নিয়ম-নীতির দ্বারা। গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ শক্তিকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কাজে লাগালেই এই নিয়মনীতিগুলো আমাদের আয়ত্বে আসে। এই নিয়ম-নীতিগুলো জানা এবং সেই জানার ওপর ভিত্তি করেই জগৎ ও জীবনকে সর্বোত্তম পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার পথ খুঁজে বের করার শক্তি অর্জনই শিক্ষা। মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষা কখনও কারও মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষা অর্জনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিটা আসলে কী। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে জানতে হবে, এই শিক্ষার সূচনা হয় কখন এবং কীভাবে? শিক্ষার সূচনা কখন হয় : এই অর্জনের সূচনা হয় মাতৃগর্ভে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবেই। প্রকৃতির দেওয়া কিছু সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই তার সূচনা। এই সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার পরবর্তী প

জল, না পানি : জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয়

জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয় আলী হোসেন  সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে চিত্র শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য পানি শব্দকে বাংলা নয় বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, "আমরা কোনোদিন কখনও বাংলা ভাষায় পানি (শব্দটা) ব্যবহার করি না"। শুধু তা-ই নয়, পানি শব্দের ব্যবহারের মধ্যে তিনি 'সাম্প্রদায়িকতার ছাপ'ও দেখতে পেয়েছেন। প্রশ্ন হল - এক, এই ভাবনা কতটা বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাস্থ্যকর এবং কতটা 'বাংলা ভাষার ইতিহাস' সম্মত? দুই, জল বা পানি নিয়ে যারা জলঘোলা করছেন তারা কি বাংলাকে ভালোবেসে করছেন? মনে হয় না। কারণ, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এরা কেউ নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াননি বা পড়ান না। ব্যবহারিক জীবনেও তারা বাংলার ভাষার চেয়ে ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে বা গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, বলা ভালো গর্ববোধ করেন। প্রসংগত মনে রাখা দরকার, বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোতে যারা ভর্তি হয়, তারা অধিকাংশই গরীব ঘরের সন্তান। বলা ভালো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারাই বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কারণ, সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়ানোর পাশাপাশি, বা

নিম্নবর্গের মানুষ মার খাচ্ছে কেন

নিম্নবর্গের মানুষ কীভাবে পিছিয়ে পড়েছেন? সমাধান কীভাবে? এদেশের নিম্নবর্গের মানুষ নিজেদের বাঁচাতে যুগ যুগ ধরে ধর্ম পরিবর্তন করেছে। কখনও বৌদ্ধ (প্রাচীন যুগ), কখনও মুসলমান (মধুযুগ), কিম্বা কখনো খ্রিস্টান (আধুনিক যুগ) হয়েছে। কিন্তু কখনই নিজেদের চিন্তা-চেতনাকে পাল্টানোর কথা ভাবেনি। পরিবর্তন হচ্ছে অলংঘনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম। যারা এই নিয়ম মেনে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে, তারাই লাভবান হয়, টিকে থাকে। “পাল্টে গেলেই জীবন বাড়ে না পাল্টালে নয়, জীবন মানেই এগিয়ে যাওয়া নইলে মৃত্যু হয়” জীবনের এই চরম সত্য তারা অধিকাংশই উপলব্ধি করতে পারেনি। পৃথিবীর যেকোন উন্নত জাতির দিকে তাকান, তারা দ্রুততার সঙ্গে এই পরিবর্তনকে মেনে নিজেদেরকে পুনর্গঠন করে নিয়েছে। যারা পারেনি বা নেয়নি তারাই মার খাচ্ছে, অতীতেও খেয়েছে। বুদ্ধিমান জাতি নিজের দুর্বলতাকে মেনে নেয় এবং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সময়ের সঙ্গে তাল রেখে নিজেদের চিন্তা এবং চেতনায় পরিবর্তন আনে। খ্রিষ্টান, ইহুদি-সহ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন জাতি - যারাই এই পরিবর্তন মেনে নিয়েছে তারাই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মহানবীর (সঃ) গৌরবময় উত্থান (যা এক ধরণ

আধুনিক মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির (পুঁজিপতিদের) তোতাপাখি

গোদি মিডিয়া : কর্পোরেট পুঁজির তোতাপাখি পশ্চিমী মিডিয়াকে 'ইসরাইল সরকারের তোতাপাখি' নামে পরিচয় দেওয়া হয় সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া হাউজের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি একইভাবে ভারতীয় কর্পোরেট মিডিয়া ভারত সরকার তথা 'কর্পোরেট পুঁজির  তোতাপাখি' হিসাবে পরিচয় পাচ্ছে, যাকে নিন্দুকেরা 'গোদী মিডিয়া' নামে অভিহিত করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইল যা বলে, ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া, তোতা পাখির মতো তা-ই প্রচার করে। সাংবাদিকতার প্রধান প্রধান শর্তগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরাইলের দেওয়া তথ্যই তারা প্রচার করে অন্ধ ও নির্লজ্জভাবে। ভারতের ক্ষেত্রেও করপোরেট মিডিয়া বর্তমানে সেটাই করছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, নত মস্তকে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য বিনা বিচারে প্রচার করে চলেছে অধিকাংশ মিডিয়া হাউজ।  অর্থাৎ তাদের সম্প্রচারিত খবরের বড় অংশই হয় নিয়ন্ত্রিত অথবা কখনও কখনও অসত্য - এমন দাবিও করা হয়।  আসলে সিংহভাগ মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন এক-একজন  করপোরেট পুঁজির মালিক বা পুঁজিপতি। এরা কি কখনও নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় - এমন খবর, তথ্য বা তত্ত্ব প্রচার করবে? করবে না, করেও না। আর এ

সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের আয়না

  সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। The face of the minority is the mirror of democracy কোন দেশ কতটা গণতান্ত্রিক, তা বোঝা যায় সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা কতটা মজবুত, তা থেকে। কারণ, সংখ্যালঘুর মুখই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। সংখ্যালঘুরা সঙ্গত কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চেয়ে বেশি বঞ্চনাজনিত মনস্তাত্ত্বিক চাপে থাকে। এই চাপ দু’ভাবে তৈরি হয়। ১) সংখ্যাগিষ্ঠতাজনিত সুবিধা যা সংখ্যাগুরুরা পায়, সংখ্যালঘুরা কখনই তা পায় না বা পাবে না - এই ধারণা, যার কিছুটা হলেও ভিত্তি রয়েছে ২) সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বৃহত্তম (?) জনগোষ্ঠীর অংশ হওয়ার সুবাদে যে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা তৈরি হয় এবং যা বহুজনের মধ্যে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তার ভয়ে। এই চাপ কতটা গভীর তা সংখ্যালঘু ছাড়া বোঝা খুব মুশকিল। তবে আলোকপ্রাপ্ত মানুষ মাত্রই যে তা উপলব্ধি করতে পারেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই ধরণের চাপ তৈরি করে কিছু অসাধু মানুষ যখন সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কমানোর ক্ষমতা একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির হাতেই থাকে