যেসব কমলা কাস্তের ভামপন্থীরা বামপন্থী সেজে আছেন, আসলে তারা বামপন্থাকে কলঙ্গিত করছেন। এদের কাজই হচ্ছে বামপন্থী সেজে বামপন্থার ক্ষতিকরা।সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বামপন্থাকে মুছে দিতে এই কৌশলই গ্রহণ করেছিল গরবাচেভরা। মদত দিয়েছিল আমেরিকা।
যে সমস্ত বামপন্থি (ভামপন্থী) বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বললেই মমতাকে একই দোষে দোষী না দেখাতে পারলে পেটের ভাত হজম হয় না, মনে রাখুন, প্রকৃত বামপন্থীরা আপনাদের চিনতে পারে। নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে দেখুন তো এই ধরণের কথা যারা প্রকাশ্যে প্রচার করে তাদের সঙ্গে কোথায় কোথায় মিল। যদি মিল পান তবে জনগণও কাস্তের রঙ কমলা আর বামকে রাম বলেই ভুল করবে। আর তার খেসারত আপনাদেরই দিতে হবে।
প্রকৃত বামপন্থীরা মমতাকে নিশ্চয়ই সমালোচনা করবেন। যেটা সত্যই সমালোচনার যোগ্য সেটাকেই সমালোচনা করবেন। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, অসত্যকে সত্য বলে চালালে জনবিচ্ছিন্ন হতে হবে। আর অসত্য বলাই যাদের মূলমন্ত্র তাদেরকে ইন্ধন যোগান হয়। লাভবান হবে অসত্যবাদী ফ্যাসিবাদী শক্তি।
এটা ঐতিহাসিক ভাবেই সত্য যে, বামপন্থীরা প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ এবং সামাজিক ও আর্থিক বৈষম্যের বিরোধী। এই লক্ষ্যের বিপক্ষে যারা তারাই বামপন্থীদের সমালোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে। এগুলো দূর করাই বামপন্থার মূল লক্ষ্য। যেন-তেন প্রকারে শুধুমাত্র ক্ষমতায় আসা নয়। মানুষকে প্রকৃত সত্য তুলে ধরে শিক্ষিতও সচেতন করে তোলাই বামপন্থার প্রধান কাজ। এই কাজ ঠিকঠাক করতে পারলেই মানুষের আস্থা অর্জন করা যায়।
একাজ ডানপন্থীরা করেন না। তাদের শ্রেণিগত স্বার্থের কারণেই তারা তা করেন না। তারা ক্ষমতা দখলের স্বার্থে যেকোন পথ অবলম্বনকেই মান্যতা দেয়। এখানেই বামপন্থার সাথে ডানপন্থার সুক্ষ ও মৌলিক পার্থক্য। এই পার্থক্য না থাকলে আর তা মানুষকে বোঝাতে না পারলে বর্তমান সময়ে মানুষ বামপন্থার কাছে আসবে না।
আসবে তখনই যখন তাকে বোঝানো সম্ভব হবে ডানপন্থি সরকারের সঙ্গে বামপন্থি সরকারের মৌলিক পার্থক্য কোথায় ও তার সুদূরপ্রসারী ফলাফল কীভাবে তার মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে।
আজকে যারা সরকারে আছে, তারা যে নীতি নিচ্ছেন তা বামপন্থীরা অনুসরণ করে এসেছেন দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর। সমাজ বা রাষ্ট্রবিপ্লবের গণতান্ত্রিক পথে যেতে মানুষকে রিলিফ দেওয়ার জন্যই তো রাজ্য সরকারে আসা। এটা তো বামপন্থার একটি মৌলিক নীতি। সেই রিলিফ যদি সাধারণ মানুষ অন্য সরকারের কাছ থেকে পায় তবে সে আপনার কাছে আসবে কেন? আসবে তখনই যখন তার সাথে বামপন্থার মৌলিক পার্থক্য খুঁজে পাবে। ভেবে দেখতে হবে, নিচুতলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে অন্যদলের নেতাকর্মীদের সেই পার্থক্য মানুষ খুঁজে পাচ্ছে তো?
অন্যদিকে এই নীতি ও কর্মসূচির বিরোধিতা করলে, সেটা বামপন্থীদের মিথ্যাচার বলে বিবেচিত হবে। মানুষ মানবে না, কাছে আসবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন