সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আমরা কি সত্যিই স্বাধীন হয়েছি?

আমরা কি সত্যিই স্বাধীন হয়েছি? স্বাধীনতা দিবস ও একটি প্রশ্ন : ভারত কতটা স্বাধীন হয়েছে? ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন ছাত্রদের দেশের ৭৭-তম স্বাধীনতা দিবসে আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা! এই দিনটি আমাদের সকলের জন্য গৌরবময় এবং পবিত্র। ...আমরা সবাই, সমানভাবে, এই মহান দেশের নাগরিক। আমাদের সবার সমান সুযোগ সুবিধা ও অধিকার রয়েছে এবং আমাদের কর্তব্যও অভিন্ন। গত ১৪ই আগস্ট সন্ধ্যা ৭ টা ৪০ মিনিটে, রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের ৭৭-তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে — এই কথাগুলো বলেছেন। এখন প্রশ্ন হল, আমাদের সবার সমান সুযোগ সুবিধা সত্যিই কি আছে? আসুন, ইতিহাসের পাতায় চোখ রেখে বোঝার চেষ্টা করি। ১৬০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইংল‍্যান্ডের তৎকালীন রাণী প্রথম এলিজাবেথ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার রাজকীয় সনদ প্রদান করেন। ১৬৯০ সালে এই কোম্পানিটিই কলকাতায় পৌঁছায় বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে। এরপর পলাশী, বক্সার সহ একাধিক ষড়যন্ত্র ও নামমাত্র যুদ্ধের সাহায্যে এবং ১৭৬৫ সালে দেওয়ানী লাভের (রাজস্ব আদায়ের অধিকার) মধ্য দিয়ে ভারতে তাদের সাম্রাজ্...

সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা কবজ কী এবং কেন?

 সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা কবজ কী এবং কেন? আধুনিক শিক্ষাই একমাত্র সংখ্যালঘুর শক্তি-স্বল্পতার বিকল্প উৎস হতে পারে। জুন মাস (২০১৯) হংকং এ একটি সংখ্যালঘু শ্রেণির বিক্ষোভ যারা সংখ্যালঘু বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা বিদ্বেষ ছড়ানোয় সংখ্যালঘুদের কোন লাভ নেই। কারণ, যারা সংখ্যায় লঘু হয়, তাদের দেওয়া পাল্টা বিদ্বেষ ভাষণ, যৌক্তিক কারণেই কোন কাজে আসে না। উল্টে ভয়ংকর ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা, এতে সংখ্যাগুরুর বিদ্বেষ ভাষণকারি অংশের হাতে যেটা এতদিন ছিল অজুহাত, তা ন্যায্যতা পেতে শুরু করে। অর্থাৎ সংখ্যালঘুর বিদ্বেষ ভাষণকে সামনে এনে তারা তাদের অজুহাতকে ন্যায্যতা দেয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।  তাছাড়া, লড়াই যখন অসম সংখ্যার মধ্যে হয়, তখন পেশী শক্তি বা বিদ্বেষ ভাষণ কখনই ইতিবাচক ফলাফল এনে দিতে পারে না। এক্ষেত্রে শিক্ষাই হল একমাত্র হাতিয়ার। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেমন শ্রমিকের শ্রমশক্তির (স্বল্পতার) বিকল্প হয়, তেমনভাবেই আধুনিক শিক্ষাই একমাত্র সংখ্যালঘুর শক্তি-স্বল্পতার বিকল্প উৎস হতে পারে। বস্তুত, সংখ্যালঘুদের মনে রাখতে হবে, বিদ্বেষ ভাষণকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব রয়েছে...

ধর্মের দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতা ও তা দূর করার উপায়?

ধর্মের দুর্বলতা কী? ধর্মের দুর্বলতা দূর করার উপায় কি আছে? মনুষ্য সমাজকে সবচেয়ে বেশি বিভাজিত করেছে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম। অথচ, প্রতিটি ধর্মের উৎপত্তি হয়েছিল মানব কল্যাণকে নিশ্চিত করার জন্য। কিন্তু যখনই তা সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তখনই তার দখল নিয়েছে ক্ষমতালিপ্সু একদল মানুষ। জন্ম দিয়েছে ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। নানা রকম বিধি বিধান তৈরি করে, সহজ ও সরল বিশ্বাসকে কৌশলে জটিল ও কুটিল করে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, মানুষকে একটি ‘সবজান্তা প্রতিষ্ঠানে’র মুখাপেক্ষী করে তোলা। ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার বাসনায় ধর্মকে এভাবেই তারা হাতিয়ার করেছে। ধর্মের নামে মানুষকে বিভাজিত করার এই অভিনব কৌশলটাই হল সেই হাতিয়ার। ফলে মানুষ দলে দলে বিভক্ত হয়ে গেছেন নানা রঙের প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ছত্র-ছায়ায়। ধর্মের দুর্বলতা এখানেই যে সে ক্ষমতালিপ্সু এই সব মানুষদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। তাই কোন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম নয়, মানুষের প্রকৃত ধর্ম হওয়া উচিত মানব ধর্ম। ধর্ম যদি মানতেই হয় মানবধর্মকেই মানা উচিৎ, মানুষের কল্যাণই যেখানে এক এবং একমাত্র লক্ষ্য। উদ্দেশ্যও বটে। ধর্ম কী কেবলই বিশ্বাস? আসলে ধর্ম...

হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল?

হিন্দু কারা? কীভাবে তারা হিন্দু হল? যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ হিন্দু হলেন কবে থেকে? অবাক হবেন তাই তো? কিন্তু আমি হবো না। কারণ, তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয়ই নন, ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং ‘শাহ’ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি। লালকৃষ্ণ আদবানির নামও শুনেছেন আপনি। মজার কথা হল আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ ‘আদবান’ থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর পদবীও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। ভাষাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের বিশ্লেষণ বলছে, উচ্চবর্ণের বিশেষ করে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মানুষদের, উৎসভূমি হল পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল। তারও আগে ছিল ইউরোপের ককেশাস অঞ্চলে। আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। তারা নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন এবং এই পরিচয়ে তারা গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ ধরে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এসে এদেরই উত্তরসূরী ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) অর্থাৎ পারস্যের কিছু পর্যটক-ঐতিহাসিক, এদেশের আদিম অধিবাসীদের ’হিন্দু’ বলে অভিহিত করেছেন তাদের বিভিন্ন ভ্রমণ বৃত্তান্তে। ...

সরকারি স্কুল বন্ধ করার পরিণতি

সরকারি স্কুল বন্ধ করার পরিণতি  আপনার চারপাশের গাছ গুলোর রুগ্ন। কেউ কেউ মৃতপ্রায়। আপনি কি সেগুলোকে কেটে ফেলবেন? উত্তর হওয়া উচিৎ না। কারণ, এটা মোটেই সমস্যার সমাধান নয়। সমস্যার সমাধান করতে গেলে গাছগুলোর রোগ চিহ্নিত করা এবং তার চিকিৎসা করা জরুরী। যেগুলি বাঁচবে না, সেগুলো কেটে দিয়ে নতুন করে গাছ লাগাতে হবে। এই নতুন গাছ একদিকে যেমন ফল ও ফুল দেবে, তেমনি দেবে প্রাণদায়ী অক্সিজেন, দেবে আরামদায়ক জলবায়ু এবং সুশীতল ছায়া। একটা সরকারি স্কুল ঠিক একটা সবুজ পাতা ভরা গাছের মত। কোনো কারণে যদি সে রুগ্ন হয়ে পড়ে, তবে তাকে বন্ধ করে দেওয়া (মেরে ফেলা) মোটেই সঠিক কাজ নয়। যত্ন নিয়ে তার রুগ্ন হওয়ার কারণ খুঁজে বের করা এবং তার প্রতিকার করাই হলো সমস্যা সমাধানের একমাত্র ও সঠিক উপায়। প্রশ্ন হল, কেন একটা সরকারি স্কুল সবুজ গাছের বন? এর রুগ্নতার কারণ কী এবং কীভাবে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব?

জল, না পানি : জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয়

জল নিয়ে জলঘোলা করা পানির মত সহজ নয় আলী হোসেন  সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে চিত্র শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য পানি শব্দকে বাংলা নয় বলে দাবি করেছেন। বলেছেন, "আমরা কোনোদিন কখনও বাংলা ভাষায় পানি (শব্দটা) ব্যবহার করি না"। শুধু তা-ই নয়, পানি শব্দের ব্যবহারের মধ্যে তিনি 'সাম্প্রদায়িকতার ছাপ'ও দেখতে পেয়েছেন। প্রশ্ন হল - এক, এই ভাবনা কতটা বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাস্থ্যকর এবং কতটা 'বাংলা ভাষার ইতিহাস' সম্মত? দুই, জল বা পানি নিয়ে যারা জলঘোলা করছেন তারা কি বাংলাকে ভালোবেসে করছেন? মনে হয় না। কারণ, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এরা কেউ নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াননি বা পড়ান না। ব্যবহারিক জীবনেও তারা বাংলার ভাষার চেয়ে ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে বা গান শুনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, বলা ভালো গর্ববোধ করেন। প্রসংগত মনে রাখা দরকার, বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোতে যারা ভর্তি হয়, তারা অধিকাংশই গরীব ঘরের সন্তান। বলা ভালো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারাই বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কারণ, সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়ানোর পাশাপাশি, বা...

সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের আয়না

  সংখ্যালঘুর মুখই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। The face of the minority is the mirror of democracy কোন দেশ কতটা গণতান্ত্রিক, তা বোঝা যায় সে দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা কতটা মজবুত, তা থেকে। কারণ, সংখ্যালঘুর মুখই হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী আয়না। সংখ্যালঘুরা সঙ্গত কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চেয়ে বেশি বঞ্চনাজনিত মনস্তাত্ত্বিক চাপে থাকে। এই চাপ দু’ভাবে তৈরি হয়। ১) সংখ্যাগিষ্ঠতাজনিত সুবিধা যা সংখ্যাগুরুরা পায়, সংখ্যালঘুরা কখনই তা পায় না বা পাবে না - এই ধারণা, যার কিছুটা হলেও ভিত্তি রয়েছে ২) সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বৃহত্তম (?) জনগোষ্ঠীর অংশ হওয়ার সুবাদে যে কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা তৈরি হয় এবং যা বহুজনের মধ্যে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তার ভয়ে। এই চাপ কতটা গভীর তা সংখ্যালঘু ছাড়া বোঝা খুব মুশকিল। তবে আলোকপ্রাপ্ত মানুষ মাত্রই যে তা উপলব্ধি করতে পারেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই ধরণের চাপ তৈরি করে কিছু অসাধু মানুষ যখন সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কমানোর ক্ষমতা একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রশক্তির হাতেই ...