সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বিজেপি ও আরএসএসের রাষ্ট্রচিন্তার অসারতা

বিজেপি ও আরএসএসের রাষ্ট্রচিন্তার অসারতা  The futility of BJP and RSS nationalism যে ধর্মের উৎপত্তি হয়েছে মানুষের মুক্তির জন্য, সেই ধর্মই যখন মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে,তখন বুঝতে হবে সে-ধর্ম ধর্মব্যবসয়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। ধর্মব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল ধর্মপ্রাণ মানুষদের ধর্মগুরু বা ধর্মীয় নেতাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাস, যা আসলে একধরণের অন্ধত্ব। আধুনিক শিক্ষার আলোয় যারা আসতে পারেনি, তারাই এই  অন্ধত্বের শিকার। ধর্মব্যবসায়ীরা মানুষের এই অন্ধত্বকে খুব সহজে কাজে লাগাতে পারে। কারণ, ধর্মপ্রাণ মানুষ অলৌকিক শক্তির উপর ভরসা ও বিশ্বাস করে। সঙ্গে এও বিশ্বাস করে যে, ধর্মগুরুদের অনুসারী হয়ে চললে এবং ধর্মের অনুষ্ঠানিকতা, আচার-বিচার অনুসরণের সাথে সাথে ধর্মীয় নেতা ও সংগঠনে দান-ধ্যান করলেই ইহলৌকিক ও পরলৌকিক জীবনে সাফল্য অর্জন সহজ হয়ে যাবে। এদের এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই ধর্মব্যবসায়ীরা নিজেদের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করে। উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক বড় বড় ধর্মই কিন্তু সূচনালগ্নে ধর্মচর্চার বিধান হিসেবে এবং জীবনে সাফল্য লাভের চাবিকাঠি হিসাবে সৎকর্ম ও মানবিক মূল্যবোধকে সব

প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম টিকে থাকার কারণ

প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম টিকে থাকার কারণ Institutional religion is the reason for survival ধর্ম দু'ধরনের। একটা মানসিক বা মানবিক। অন্যটা প্রাতিষ্ঠানিক। মানবিক ধর্মের জন্ম হয় মানুষের অন্তরে। এর কোন প্রতিষ্ঠাতা নেই। মানুষের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই তার অন্তরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জন্ম নেয় এই ধর্মবোধ। অন্যদিকে, পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষ তার অন্তরে জীবন ও জগত সম্পর্কে যে অভিজ্ঞতা, ভালোলাগা, ভালোবাসা ইত্যাদির জন্ম হয়, তার উপর ভিত্তি করে তার যে বিশ্বাস গড়ে ওঠে, তা-ই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম। তাই এর প্রতিষ্ঠাতা আছে। আছে প্রচারক সংগঠন। একজন মানব শিশু যখন জন্মায় তখন তাকে শিখিয়ে দিতে হয় না মানুষকে ভালোবাসার কথা, টিফিন ভাগ করে খাওয়ার কথা। এগুলো তার মানবিক ধর্মের প্রতিফলন। এগুলো নিয়েই সে জন্মায়। কিন্তু তাকে শিখিয়ে দিতে হয় কে আপন, কে পর। তাকে শিখিয়ে দিতে হয় তার প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম কী। কীভাবে চালাকির আশ্রয় নিয়ে, সত্য গোপন করে, নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে হয়। মৃত্যু ভয় ও রোগ-ব্যাধির ভয় আছে বলেই ধর্ম নামক প্রতিষ্ঠানটা এখনো টিকে আছে। যারা এই ভয় পায় না, তাদেরকে লোকে নাস্তিক বলে। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম তারা পালন

শিক্ষা কী, কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে অর্জন করা যায়?

শিক্ষা কী, কেন এবং কীভাবে অর্জন করতে হয়? সূচিপত্র : What is education, why it is needed and how to achieve it শিক্ষা কী শিক্ষা হল এক ধরনের অর্জন, যা নিজের ইচ্ছা শক্তির সাহায্যে নিজে নিজেই নিজের মধ্যে জমা করতে হয়। প্রকৃতি থেকেই সেই অর্জন আমাদের চেতনায় আসে। সেই চেতনাই আমাদের জানিয়ে দেয়, জগৎ ও জীবন পরিচালিত হয় প্রকৃতির কিছু অলংঘনীয় নিয়ম-নীতির দ্বারা। গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ শক্তিকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে কাজে লাগালেই এই নিয়মনীতিগুলো আমাদের আয়ত্বে আসে। এই নিয়ম-নীতিগুলো জানা এবং সেই জানার ওপর ভিত্তি করেই জগৎ ও জীবনকে সর্বোত্তম পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার পথ খুঁজে বের করার শক্তি অর্জনই শিক্ষা। মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষা কখনও কারও মধ্যে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখন প্রশ্ন হল, শিক্ষা অর্জনের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিটা আসলে কী। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে জানতে হবে, এই শিক্ষার সূচনা হয় কখন এবং কীভাবে? শিক্ষার সূচনা কখন হয় : এই অর্জনের সূচনা হয় মাতৃগর্ভে এবং তা প্রাকৃতিক ভাবেই। প্রকৃতির দেওয়া কিছু সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই তার সূচনা। এই সহজাত শিক্ষাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার পরবর্তী প

দেশ ভাগ ও উদ্বাস্তু সমস্যা

দেশ ভাগ ও উদ্বাস্তু সমস্যা  সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ কর

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানির অধীনে আমরা

আমরা কি সত্যি স্বাধীনতা পেয়েছি ছিলাম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে, আছি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানির অধীনে। ব্রিটিশ শাসনে আমরা: ১৯৪৭ সালের আগে প্রায় ২০০ বছর দেশ শাসন করেছে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। কোম্পানির বোর্ড অফ ডিরেক্টররা সরাসরি এই শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকতেন না। তারা তাদের সমর্থক রাজনীতিকদের দেশ শাসনের দায়িত্বে বসাতেন। তাদের দিয়েই কোম্পানি ভারত, চিন-সহ পৃথিবীর অন্যান্য উপনিবেশগুলোতে নীতি নির্ধারণ ও তার প্রয়োগ ঘটাতেন। ব্রিটিশ শাসনের উদ্দেশ্য - ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক লাভই মুখ্য: বলা বাহুল্য, এই নীতি নির্ধারণ ও প্রয়োগের মূল উদ্দ্যেশ্য ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক লাভ। ভারতীয় অর্থনিতির সঙ্গে সম্পর্কিত সব ক্ষেত্র - যেমন শিল্প নীতি, কৃষি নীতি, বাণিজ্য নীতি - সবই নির্ধারিত ও পরিচালিত হত ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির স্বার্থকে সামনে রেখে। কোম্পানির সঙ্গে তৎকালীন ভারত সরকারের এই অশুভ আঁতাতের ভুরিভুরি উদাহরণ রয়েছে । মাত্র একটি উদাহরণ দেখুন। ১৮৩২ সাল। ভারতে রেলপথ স্থাপনের প্রস্তাব উঠলো। কেন? ব্রিটিশ পুঁজির বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা এবং বিদ্রোহ দমন-সহ অন্যান্য সামর