সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুলাই, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বাঙালির দূর্ভাগ্য, না আত্মহত্যা!!

বাঙালির দূর্ভাগ্য না আত্মহত্যা!! –----------------- ভারত স্বাধীন হবার ক্ষীর লুটেপুটে খেয়েছে মহারাষ্ট্র আর গুজরাট। আর দাম দিয়েছে বাংলা আর পাঞ্জাব। পৃথিবীর ইতিহাসের সবথেকে বড় Exodusএর ইতিহাস লেখা হয়েছে এই দুই অঞ্চলে। স্বাধীন ভারতে তবু পাঞ্জাবী উদবাস্তুদের দিল্লীর আশপাশেই পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল, যথেষ্ট সরকারি অনুদান ছিল। আর পূর্ববঙ্গ থেকে আগত উদবাস্তুদের একটা বড় অংশ করেছিলেন জমি দখল। আরেকটা অংশকে পুনর্বাসন দেওয়া হলো আন্দামান আর দণ্ডকারণ্যে। ভারতের স্বাধীনতার অসহায় অভিমন্যু হয়ে গেল বাঙালী। ____ Sujan Bhattacharyya সজনবাবু ঠিকই বলেছেন। বাঙালির সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য এই ইতিহাস তারা জানেনা, জানার চেষ্টাও করেনা। বাঙালির নিজের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত তাই সেদিন (স্বাধীনতার সময়) সফল হয়েছিল। আজ নতুন করে আবার ষড়যন্ত্র করছে বাঙালিকে বাস্তুচ্যুত করার। বাঙালি আবার যদি একই ভুল করে তার খেসারত বাঙালিকেই দিতে হবে। অখন্ড বাংলা থাকলে ভারতের ভাগ্য বাঙালির হাতে চলে যেত। সেটা রোধ করার জন্যই তখন হিন্দুত্বের তাস খেলেছিল গোবলয়ের নেতারা। আর সেই চক্রান্তের জালে মাথা গলিয়েছিল আজকের বাঙালির 'বুদ্ধিমান'

সীমান্ত আখ্যান, বাঙালির আত্মানুসন্ধানের ডিজিটাল আখ্যান

সময়ের সঙ্গে সমস্যার চরিত্র বদলায়। কিন্তু মুলটা বদলায় না। যদি সে সমস্যা ইচ্ছা করে তৈরি হয়ে থাকে বিশেষ সুবিধা ভোগেই লোভে, তবে তো অন্য কথা চলেই না। স্বনামধন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌমিত্র দস্তিদারের ডকুমেন্টারি ফিল্প 'সীমান্ত আখ্যান' দেখার পর এই উপলব্ধি মাথা জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখলাম, দেশ ভাগ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার অবসান হয়নি। শুধু সমস্যার চরিত্রটা পাল্টেছে। এই যে সমস্যা রয়ে গেল, কোন গেল? তার উত্তর ও পাওয়া গেল 'সীমান্ত আখ্যান' এ। আসলে দেশ ভাগ তো দেশের জনগণ চাননি, চেয়েছেন দেশের নেতারা। চেয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত সুবিধাকে নিজেদের কুক্ষিগত করার নেশায়। আর এই নেশার রসদ যোগান দিতে পারার নিশ্চয়তা নির্ভর করে রাজনৈতিক ক্ষমতার লাগাম নিজের হাতে থাকার ওপর। তাই রাজনীতিকরা এই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য জনগণকে 'ডিভাইড এন্ড রুল' পলিছি দ্বারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করেছেন এবং করে চলেছেন। এ সমস্যা নতুন না, ব্রিটিশ সরকার এর বীজ রোপণ করে গেছেন, এখন কেউ তার সুফল ভোগ করছে (রাজনীতিকরা) আর কেউ কুফল (জনগন)। 'সীমান্ত আখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দে

পালটে গেলেই জীবন বাড়ে.... নইলে মৃত্যু হয়

পালটে গেলেই জীবন বাড়ে, না পাল্টালে নয় জীবন মানে এগিয়ে যাওয়া, নইলে মৃত্যু হয় আলী হোসেন যখন ছোট ছিলাম, মাঠে যেতাম গরু চরাতে। দিগন্তের দিকে তাকিয়ে ভাবতাম মাঠ পেরিয়ে ওপাশের গাছপালায় ঘেরা সবুজ গ্রামটার ওপারেই আকাশটা বোধহয় মাটিতে নেমে এসেছে। ওটাই পৃথিবীর শেষ প্রান্ত। একছুট্টে পৃথিবীর শেষ প্রান্তটা, ইচ্ছা করলেই ছুঁয়ে আসতে পারি আমি । এই ছুঁয়ে দেখার ভাবনা অনেক সময় ওই ইচ্ছাটাকে ভীষণ রকম উস্কে দিত। তার এই উস্কানিতেই একদিন হাঁটতে শুরু করি, আকাশ ছুঁয়ে দেখবো বলে। তারপর অনেকদূর এগোনোর পর, নিজের গ্রামটার দিকে তাকাতেই বুকের ভিতরটা যেন কেমন করে উঠে। নিজের গ্রামটাকে ঘিরে থাকা গাছগুলো কেমন যেন ছোট হয়ে গেছে কোন এক মন্ত্র বলে। পালটে গেল ভাবনাটা। মনে হল, এত দূরে আসার কী দরকার? আমার গ্রামের ওপারেরই তো আকাশটা নেমে গেছে মাটিতে। ওখানে গেলেই তো আকাশটা ছুঁতে পারি। এভাবেই পালটে যেতে দেখেছি একের পর এক ভাবনা। আর এভাবে পালটে গেলেই, মনে হত, আমি যেন অনেকটা বড় হয়ে গেছি। এখন বুঝি এই বড় হওয়ার আসলে কোন অন্ত নেই। অন্তহীন এই বেড়ে ওঠা, বেড়ে চলা। সমীরদার সঙ্গে প্রথম পরিচয়েই আর একবার আমার সেই উপলব্ধিটা প্রামান্যতা

গণতন্ত্রের মড়ক

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত। এই অবস্থান অবশ্য জনসংখ্যার নিরিখে। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার নিরিখে তার স্থান ১৪০এ। কিন্তু একথা ঠিক যে, ষাটের দশক থেকে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত আছে। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি দু’বছরের জরুরি আইনের শাসন বাদ দিলে ভারতে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিতে নিয়মিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন বিশেষভাবে নজর কাড়ে এজন্য যে, প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে, যা ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় একটা রেকর্ড সৃষ্টিকারি ঘটনা। কিন্তু লজ্জার কথা হল, এত বছর গণতান্ত্রিক আবহ থাকা সত্ত্বেও তার পরিণত চেহারা আজও আমরা দেখছি না।  প্রশ্ন হল কেন এমন হল। ভারতের খ্যাতনামা সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার বলেছেন, ভারতের শাসকরা ‘সোললেস’ হয়ে পড়েছেন। রজনী কোঠারির বিবেচনায় ভারত একটি ‘ফেইলড ডেমোক্রেটিক স্টেট’। অরুন্ধুতি রায় বলেছেন, ‘ব্রোকেন রিপাবলিক’। তিন প্রজন্মের তিনজন বিশিষ্ট ব্যাক্তির ভাষ্য ভারতকে কাঠগড়ায় তুলেছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের পোষ্টমটেম করলে উল্লেখিত ভাষ্যকারদের বক্তব্য জীবন্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে কুলদীপ নায়ারের ভারতের শাসকদে

চেতনার জন্ম কিংবা মৃত্যু

শিক্ষা আনে চেতনা আর চেতনা আনে বিপ্লব। এটা যে শুধু স্লোগান নয়, পরম সত্য তা আরও একবার প্রমানিত হল। প্রামাণ করলো ছোট্ট মেয়ে মালালা ইউসুফজাই। পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মেয়ে মাত্র এগার বছর বয়সেই বুঝে ফেলেছে চেতনাহীন মানুষ পূর্ণ-মানুষ নয়; মানুষের রূপ পাওয়া একটা সাধারণ জীব-মাত্র। মানুষের সঙ্গে এইসব জীবের প্রধান পার্থক্যই নিহিত রয়েছে চেতনা থাকা আর না-থাকার মধ্যে। বস্তুত, চেতনা-রহিত মানুষ হিংস্র পশুর চেয়েও ভয়ঙ্কর হয়। কিন্তু লক্ষ্য করার বিষয় হল, হিংস্র পশু ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে মুলতঃ দুটো কারণে। এক. ক্ষুন্নিবৃত্তি দুই. আত্মরক্ষা; যা প্রত্যেক জীবের সহজাত প্রবৃত্তি। আর চেতনাহীন মানুষের ভয়ঙ্কর ও হিংস্র হওয়ার পিছনে এদুটো প্রবৃত্তির কোনটারই কোন ভুমিকা থাকে না। ২৬/১১য় আজমল কাসবরা যা করেছিল কিম্বা মালালাকে যারা হত্যা করার চেষ্টা করেছে তা ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য নয়, আত্মরক্ষার জন্যও নয়। এক্ষেত্রে চেতনার মৃত্যুই একমাত্র কারণ। অন্যদিকে এই চেতনার সরব উপস্থিতিই মালালাকে করেছে বিপ্লবী। চেতনার খোঁজে তার লড়াই শুরু মাত্র এগার বছর বয়সেই। নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে তালিবানরা  যখন হুঙ্কার তুলেছে, একফোটা মেয়েও সমান স্বরে গর্জে উ

জল-জমিনের পদাতিক: একটি দারিদ্র-লাঞ্ছিত রুগ্ন সমাজের বেড়ে ওঠার উপাখ্যান

বলা হয়, সাহিত্য সমাজের দর্পণ। আর এই দর্পণের নাম যদি হয় উপন্যাস, তবে তার কারিগর হচ্ছেন একজন কথাকার। কারিগরের কেরামতির উপর যেমন সৃষ্টির গুণমান অনেকটাই নির্ভরশীল, তেমনই কথাকারের কলমের জাদুতে ফুটে ওঠে সমাজের প্রাঞ্জল প্রতিচ্ছবি। আর একজন লেখকের সৃষ্টির গুনমান বিচারের ক্ষেত্রে তাঁর সামাজিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্নদাশঙ্কর রায় বলেছিলেন, লেখক যদি জনগণের ভাষায় লিখতে চান তবে তাঁকে বনবাস করার মতো জনবাস করতে হবে। অর্থাৎ চাষিদের সঙ্গে চাষি, মাঝিদের সঙ্গে মাঝি, জেলেদের সঙ্গে জেলে... মেথরের সঙ্গে মেথর ইত্যাদি হতে হবে। উত্তর আধুনিককালের মরমী লেখক মুর্শিদ এ এম এক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা ভোগ করেছেন, কেননা, এ ধরণের কৃচ্ছসাধন তাঁকে আলাদাভাবে করতে হয় নি। কারণ তিনি নিজে আজন্ম বেড়ে উঠেছেন দারিদ্র-লাঞ্ছিত অনগ্রসর রুগ্ন সমাজের ভেতরে থেকে। এধরনের জীবনকে তিনি দেখেছেন একেবারেই কাছ থেকে, চেনেন নিজের হাতের তালুর মত। তাই তাঁর লেখায় মেলে তাঁর কাহিনির কুশীলবদের নিখাত কণ্ঠস্বর, আর প্রাঞ্জল উচ্চারণ। ‘জলজমিনের পদাতিক’ আর্থিক ও শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে পড়া সমাজের বেড়ে ওঠার উপাখ্যান। কাহিনির নায়ক আসাদ সচ্ছল পরিবারের ছেলে

চেতনার বিপ্লব

আপনি কি 'বিপ্লব' কথাটা 'সশস্ত্র বিপ্লব' অর্থে ধরলেন? ওটা 'দ্রত ও আমূল পরিবর্তন' অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। এভাবে সমাজ পরিবর্তন আজ আর সম্ভব নয়। তাই সে আলোচনা প্রাসঙ্গিক নয়।  তাই, আমি সে অর্থে কথাটা বলিনি। আমি বলেছি আপনার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে। আপনি বলেছেন, Biplab to gostigoto bapar, manush kromosho eka hochhe. Nijer jogodol chintr kachhe nijer mukti holei onyek. আমার মতামত ঠিক এই প্রসঙ্গে। কিন্তু 'নিজের জগোদ্দ্বল চিন্তার কাছে নিজের মুক্তি হলেই' সমাজের মানুষের মুক্তি আসবে না। আপনার চারপাশের মানুষের চিন্তার মুক্তি যদি না ঘটে, আপনার মুক্ত চিন্তা নিস্ফলা হয়ে থেকে যাবে। মুক্তির সাধ আপনি পাবেন না। এই সাধ পেতে গেলে সমবেত চেষ্টা করতে হবে, সবার মধ্যে মুক্তচিন্তার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য। এই মুক্ত চিন্তার চেষ্টা সফল হলেই সমাজ, রাষ্ট্র, ধর্ম ইদ্যাদি সব ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে। এটাও একধরণের বিপ্লব। একেই আমি 'চেতনার বিপ্লব' বলে উল্লেখ করেছি। এ বিপ্লব একদিনে হয় না, একাএকা হয় না, 'দ্রুত' হয় না। এক্ষেত্রে ঘর Renovate করার প্রসঙ্গ বোধ হয় প্রাসঙ্গিক নয়। তবে

সমন্বয়ী সংস্কৃতির ভারসাম্যহীনতার গভীরেই রয়েছে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা

২৫শে মে। কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মদিন। এই উপলক্ষেই ১লা জুন পশ্চিবংগ বাংলা একাদেমির জীবনানন্দ সভাঘরে আয়োজিত হল একটি মনোজ্ঞ ও ভাব-গম্ভীর আলোচনাসভা। আলোচনার বিষয় ছিল, কাজী নজরুল ইসলাম : প্রাসঙ্গিকতা ও বর্তমান সাংস্কৃতিক পরিবেশ। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের পুত্রবধু মাননীয়া কল্যাণী কাজী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শাহযাদ ফিরদাউস, ও সৈয়দ হাসমত জালাল। উপস্থিত থাকার কথা ছিল কুমার রাণা’র। অনুষ্ঠানের আয়োজক সংগঠকের হল ‘স্বর’। স্বর শব্দটি প্রধানত তিনটি আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হয় -  ১) গলার আওয়াজ, ২) সংগীতের সুর আর ৩) যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়াই উচ্চারিত হয়। কিন্তু এধরণের আক্ষরিক কোন একটিমাত্র অর্থে আমরা শব্দটি ব্যবহার করছিনা। ব্যবহার করছি ওই তিনটি অর্থের একটি সমন্বিত রূপ নিয়ে তৈরি একটি বিশেষ অর্থে। বলতে পারেন একটি বৃহত্তর অর্থে। জানালেন সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্পাদক মুর্শিদ এ এম। কি সেই অর্থ? ব্যাখ্যা মিললো সংগঠনের আর এক সদস্যের কথায়। তিনি বললেন, আমাদের উদ্দেশ্য হল, বাঙালির একটি অভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তোলা। অর্থাৎ যেখানে ধর্ম নয়, সম্প্রদায় নয়, কেবলমাত্র