সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অখণ্ড ভারত, মন্দির ধ্বংস ও তার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি কতটা যুক্তি ও ইতিহাস সম্মত?

নব্বইয়ের দশকে বিজেপির একটি বহু চর্চিত স্লোগান ছিল ‘অযোধ্য তো ঝাঁকি হ্যায়, কাশি মথুরা বাকি হ্যায়’। স্লোগানটি আবার চর্চায় আসে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর। এই রায়ে বিতর্কিত জমিতে মন্দির বানানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে উল্টো (বলা ভালো, সময়োপযোগী) পথে হাঁটছে পাকিস্তান। সম্প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মস্থান ও ধর্মীয় ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়ে সেখানকার সুপ্রিম কোর্ট সেদেশে মন্দির ভাঙার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে। এবং মন্দির পুনর্নির্মাণের আদেশ দিয়েছে। সরকার সেই আদেশকে সমর্থন জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই বিজেপির সমর্থক ও আইটি সেল উঠেপড়ে লেগেছে এই রায়কে সুকৌশলে তাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণের কাজে লাগাতে। তাদের যুক্তি হল, অখন্ড ভারতবর্ষে, এই রায় অনুযায়ীই পদক্ষেপ করা উচিত। কারণ, বাইরের দেশের জঙ্গিরা এসে এদেশের রাজা বা সম্রাটদের হঠিয়ে নিজেরা সম্রাট সেজে বসেছিল। আর এদেশের হিন্দু মন্দিরগুলো ধ্বংস করে ইসলাম ধর্মের উপাসনালয় বানিয়েছিল। তাই পাকিস্তানী আদালতের এই রায় মেনে আবার অখন্ড ভারতের সর্বত্র, যেখানে যত হিন্দু মন্দির ধ্বংস হয়েছে, সকল মন্দিরের পুনঃপ্...

প্রসঙ্গ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধামিক পরীক্ষা : অতিমারী পর্বে শিক্ষার্থীদের লাভ-ক্ষতির হিসাব ও প্রাসঙ্গিক বিতর্ক

করোনা অতিমারী বিশ্বের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে গভীরভাবে আলোড়িত করেছে। তার অভিঘাত এখনও কাটিয়ে ওঠা যায় নি। বিশেষ করে আমাদের দেশে তা গভীর সংকটজনক পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। একথা সত্য যে, এই অতিমারীর মোকাবিলা করতে যে দূরদৃষ্টি ও বিজ্ঞানমনস্ক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে সরকারের (বিশেষ করে কেন্দ্রের) কাজে নামা উচিত ছিল, তা তারা করে নি কিম্বা পারে নি। কেন পারে নি? তা বিশ্লেষণ এই আলোচনার বিষয় নয়। বিষয় হল এই পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় যে অভূতপূর্ব সংকট তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে একটি সাম্প্রতিক বিতর্ক। সম্প্রতি শিক্ষা-দপ্তর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষা (শিক্ষা বিজ্ঞানের ভাষায় মূল্যায়ন) বাতিল ঘোষণা করেছে। প্রত্যাশিতভাবেই এতে ছাত্রছাত্রীদের লাভ-ক্ষতির হিসাব নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দানা বেধেছে নানা বিতর্ক। বলা বাহুল্য, লাভ নয়, ক্ষতির পরিমাণটাই বিতর্কের বিষয় হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়েছে। কেননা, সাধারণ অবস্থায় পরীক্ষা না হলে লাভের চেয়ে, ক্ষতিই যে বেশি হয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমান অতিমারী পরিস্থিতিতে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি আমরা আটকাতে পারছি না। সরকারও বিভিন্ন ভুল পদক্ষেপের জন্য তা পারে নি।...

ধর্ম ও বিজ্ঞান : সমস্যা ও তার উৎস সন্ধান

ধর্ম অপরিবর্তনীয়। ধর্মগুরু জগৎ ও জীবন সম্পর্কে যা বলে (আবিষ্কার করে) গেছেন তাকে যুগ যুগ ধরে মেনে নিতে হয়। বিরোধিতা করলেই প্রচন্ড রোষের কোপে পড়ে অনুসন্ধিৎসু মানুষ। কিন্তু বিজ্ঞান পরিবর্তন যোগ্য। একজন বিজ্ঞানি যা বলে গেছেন, হামেশাই তার বিরুদ্ধে বলা যায়। তাকে পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা যায়। এখানেই বিজ্ঞান ধর্মের থেকে এগিয়ে। একজন বিজ্ঞানি তার গবেষণা ও অধ্যবসায় দিয়ে, জগৎ ও জীবন সম্পর্কে যতটুকু আবিষ্কার করে যান, তা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। আরও অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যায়। এই কাজ আবিষ্কারক বিজ্ঞানী তার অনুগামীদের দিয়ে যান। বলা ভালো, এতে কেউ কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে না। কিন্তু ধর্মের ক্ষেত্রে সেটা ধর্মগুরুর স্বঘোষিত অনুগামীরা অন্য কাউকে করতে দেননা। এখানেই ধর্ম বিজ্ঞানের চেয়ে পিছিয়ে গেছে। প্রত্যেক ধর্মের ধর্মগুরু জগৎ ও জীবন সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য দিয়ে গিয়েছেন। তাদের মধ্যে যেমন কিছু তথ্য যুগান্তকারী, তেমনি কিছু তথ্য একটি যুগের কাছে সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। তা যুগ অতিক্রম করতে পারে নি। কিন্তু এই সীমাবদ্ধতা ধর্মগুরুর স্বঘোষিত অনুগামীরা দূর করতে দেন না। ফ...

সঙ্ঘ চালকের সমালোচনা : বিজেপি ও আরএসএস ভাঙনের জল্পনা

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। অতিসম্প্রতি সঙ্ঘ পরিচালক মোহন ভাগবত ভারতে করোনা মোকাবেলায় বিজেপি সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন এবং বিজেপি নেতৃত্বকে সমালোচনা করেছেন। বিজেপি বিরোধী অনেকেই ভাবছেন এটা আনন্দের খবর। ভাঙন ধরেছে হিন্দুত্ববাদী শক্তির। আসলেই কি তা-ই? কী রহস্য রয়েছে এই সমালোচনার নেপথ্যে? এপ্রসঙ্গেই পুনরায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই দুটি প্রতিষ্ঠান আদতে আলাদা কিনা। একটু গভীরে গিয়ে দেখলে বোঝা যায় যে, এরা মোটেও আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। একই উদ্দেশ্য সাধনকল্পে সঙ্ঘবদ্ধ একটি স্বার্থগোষ্ঠীর দু'টো মুখমাত্র। একটি রাজনৈতিক এবং অন্যটি সাংস্কৃতিক। তবে কে কাকে ছাপিয়ে যাবে কিংবা কে কাকে নিয়ন্ত্রণ করবে, এধরণের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিশ্চয়ই আছে। মনে রাখতে হবে, তার চরিত্র গোষ্ঠীগত নয়, তা অনেকটাই পারিবারিক দ্বন্দ্বের মতো। কোন শাসক দলের ...